ডেট ওভার হওয়ায় শপথ নিতে পারলেন না ইশরাক
নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে জয়ী হলেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে ইশরাক শপথ নিতে পারেননি। গেজেটের ৩০ দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের নীরবতার কারণে শপথগ্রহণ সম্ভব হয়নি।
নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে জয়ী হয়েও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ নিতে পারলেন না বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ইশরাক হোসেন। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে শপথ গ্রহণ না করলে তা বাতিল বলে গণ্য হয়—এই আইনি বাধ্যবাধকতার সময়সীমা সোমবার (২৬ মে) বিকেল ৪টায় শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনি শপথবঞ্চিত হলেন। এই ঘটনার পর ইশরাক হোসেন নিজে এই ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আদালত অবমাননার শামিল বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের পর ৩০ দিনের মধ্যে শপথ গ্রহণের যে আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে, সেই সময়সীমা গত সোমবার শেষ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে, ইশরাকের আইনজীবী ও রিটকারী পক্ষ শেষ দিনে শপথ নেওয়ার জন্য মরিয়া চেষ্টা করেন। উচ্চ আদালতের আদেশের আলোকে শপথগ্রহণ নিশ্চিত করতে তারা আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের অপেক্ষায় ছিলেন। তবে, শেষ পর্যন্ত মন্ত্রণালয় কোনো মতামত না দেওয়ায় ইশরাককে শপথ পড়ানো সম্ভব হয়নি। আইন মন্ত্রণালয়ের এই নীরব ভূমিকাকে আইনি জটিলতা বৃদ্ধির একটি কারণ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা, যা শপথগ্রহণে একটি বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।
ইশরাক হোসেনের বক্তব্য:
- অভিযোগ: “সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক কারণে আমাকে শপথ নিতে দেয়নি।”
- আদালত অবমাননা: এই ঘটনাকে তিনি “আদালত অবমাননার শামিল” বলে আখ্যায়িত করেছেন।
- আইনি পদক্ষেপ: “আমরা উচ্চ আদালতে যাব এবং আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।”
এ বিষয়ে ইশরাক হোসেন সরাসরি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, “সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক কারণে আমাকে শপথ নিতে দেয়নি। এটা আদালত অবমাননার শামিল।” তিনি আরও জানান, তারা উচ্চ আদালতে যাবেন এবং আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন। ইশরাকের আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন উল্লেখ করেন যে, তারা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে লিগাল নোটিশ পাঠিয়েছেন এবং আদালতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন। এদিকে, রিটকারী পক্ষও হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, যা এই আইনি প্রক্রিয়াকে আরও দীর্ঘায়িত করবে।
এই ইস্যুটি বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। ইশরাকের দল ও সমর্থকরা বলছেন, এটি ‘অদৃশ্য এক খেলা’র অংশ, যেখানে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাকে শপথ থেকে বিরত রাখা হয়েছে। তাদের মতে, এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উপর হস্তক্ষেপ এবং জনগণের রায়কে অসম্মান করা। শেষ মুহূর্তে উভয় পক্ষ কিছুটা নমনীয় হলেও, আইন মন্ত্রণালয়ের নিরব ভূমিকায় শপথগ্রহণের প্রক্রিয়া আলোর মুখ দেখেনি। ফলে প্রশ্ন থেকেই যায়—শপথ না পড়ানোর এই লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ী হলো কে? এই ঘটনা দেশের রাজনৈতিক মেরুকরণকে আরও স্পষ্ট করেছে এবং ভবিষ্যৎ আইনি ও রাজনৈতিক পদক্ষেপের দিকে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, যেখানে ইশরাকের পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের দিকে সবার দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকবে।