আন্তর্জাতিক

ভারতের শেয়ারবাজারে ১০ সেকেন্ডে গায়েব ২০ লাখ কোটি রুপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তগুলো যে সমালোচনার মুখে পড়বে, তাতে কোন সন্দেহ ছিল না। তবে ক্ষমতায় আসার পর থেকে তিনি একের পর এক অঘটনের জন্ম দিয়ে চলেছেন। গত ২ এপ্রিল, বাংলাদেশসহ ৭০টিরও বেশি দেশে বাড়তি শুল্কারোপের মাধ্যমে তিনি একতরফা বাণিজ্য যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এর ফলস্বরূপ, বৈশ্বিক অর্থনীতি চরম নেতিবাচক প্রভাব অনুভব করতে শুরু করেছে। শেয়ার বাজারের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে, এবং বিনিয়োগকারীদের মাথায় হাত পড়েছে। অনেকেই সব হারিয়ে পথে বসার আশঙ্কা করছেন।

বিশ্বের শেয়ার বাজারে এর প্রভাব পড়ে, বিশেষ করে ৭ এপ্রিল এশিয়া ও অন্যান্য শেয়ার বাজার খুললে বড় ধরনের ধস আসে। বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছেন, বাণিজ্য যুদ্ধে কোন দেশই জিতবে না, বরং এটি বিশ্বের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দীর্ঘ সময়ের জন্য মন্দায় ফেলে দিবে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কা তৈরি হওয়ায় এটি বিশ্বের সমস্ত অর্থনীতির উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।

ভারতের পুঁজিবাজারে এ দিন ৪০০০ পয়েন্ট পতন হয় বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (BSE)-এ, এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (NSE)-এর নিফটি সূচক ১০০০ পয়েন্ট কমে যায়, যা গত ১০ মাসে ভারতের শেয়ার বাজারের সবচেয়ে বড় পতন। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে মাত্র ১০ সেকেন্ডে ভারতের পুঁজিবাজার থেকে মিলিয়ে যায় ২০ লাখ কোটি রুপি। পাকিস্তানের করাচি স্টক এক্সচেঞ্জও লেনদেন বন্ধ করে দেয় যখন বেঞ্চমার্ক শেয়ার সূচক ৫ শতাংশ পড়ে যায়।

এদিকে, ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকা শুল্কারোপের প্রভাব ইতিমধ্যেই বৈশ্বিক অর্থনীতিতে সুনামির মতো অনুভূত হচ্ছে। এতে দেশগুলো জোরদার কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ৫০টিরও বেশি দেশ ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেছে, এবং কিছু রাষ্ট্রপ্রধান জনগণকে আতঙ্ক কাটানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।

বিশ্বের অন্যান্য পুঁজিবাজারেও ধস নেমেছে। জাপানের নিক্কি ২২৫ সূচক ২৬০০ পয়েন্ট পড়ে, এবং হংকং-এর হ্যাংস্যাং সূচক ৯.৮ শতাংশ কমে যায়। বিশ্বব্যাপী শেয়ার বাজারে ধসের পাশাপাশি, HSBC ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের শেয়ারে ব্যাপক পতন দেখা গেছে।

তবে, এই সঙ্কটের মাঝেও ট্রাম্প তার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটছেন না। তিনি বলেছেন, “বাজারে কী হচ্ছে তা আমি জানি না, তবে আমি নিশ্চিত যুক্তরাষ্ট্র আরো শক্তিশালী হবে। পরিশেষে এটি এমন একটি দেশ হবে, যার সাথে অন্য কোনো দেশের তুলনা হবে না। এটি হবে অর্থনৈতিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ।”

ট্রাম্প দাবি করেছেন, আমদানি-রপ্তানি সম্পর্কিত দেশগুলোর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে তার ঘোষিত শুল্কারোপের প্রভাব এতটাই ব্যাপক যে, বিভিন্ন দেশ এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য দ্রুত কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতিতে, বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অস্থিরতা চলতে থাকলে, ভবিষ্যতে আরও কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker