সিলেট

‘নিহত নাহিদ’ জীবিত অবস্থায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার

সিলেটের বিয়ানীবাজারের মাথিরাউরা ইউনিয়নের একটি বাড়ির কেয়ারটেকার ধারদেনা থেকে বাঁচতে তার নিজের বিছানা ও থাকার কক্ষে রক্তসদৃশ তরল পদার্থ ছিটিয়ে মধ্যরাতে হঠাৎ উধাও হয়ে গিয়েছিলেন। তবে ৪০ ঘণ্টার মাথায় রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। সেই কেয়ারটেকারকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

তাকে আটকের পর নিশ্চিত হওয়া গেছে, মৃত্যুর নাটক সাজিয়ে আত্মগোপন করেছিলেন নাহিদ ইসলাম ওরফে তাজুল ইসলাম (২৮) নামের ওই যুবক। তিনি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানার বড়ভিটা পূর্বপাড়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে।

রোববার (২ এপ্রিল) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শুক্রবার (৩১ মার্চ) ভোরের দিকে বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন মোবাইল ফোনে জানান, মাথিউরা ইউনিয়নের মাথিউরা পূর্বপার গ্রামের আব্দুল হেকিমের (৬৮) বাড়ির কেয়ারটেকার নাহিদ ইসলাম (২৮) খুন হয়েছেন। তার শোয়ার ঘরভর্তি রক্ত। খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানার একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে বিছানা, ঘরের মেঝে এবং বারান্দা রক্তে সয়লাব থাকলেও মরদেহ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

Image

প্রাথমিকভাবে এটি হত্যাকাণ্ড মনে হওয়ায় এর রহস্য উদঘাটন এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেফতারের জন্য বিয়ানীবাজার থানার একটি গোয়েন্দা দল অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে। অবশেষে প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার (১ এপ্রিল) খুন হওয়ার নাটক সাজানো নাহিদকে নরসিংদী থেকে গ্রেফতার করে বিয়ানীবাজার থানাপুলিশের একটি চৌকস দল।

প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেফতার নাহিদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তিনি প্রায় ১৪ বছর ধরে বিয়ানীবাজারের ওই এলাকায় আছেন। কিন্তু তার প্রকৃত পরিচয় কেউ জানতেন না। নাহিদের বাড়ি নীলফামারী। সেখানে অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় বিয়ানীবাজারে আত্মগোপনে আছেন।

তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, নাহিদ মূলত অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং এর মাধ্যমে বড় অঙ্কের টাকা তার ঋণ হয়ে যায়। এরপর তিনি কৌশলে জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নাম পরিবর্তন করে স্থায়ী ঠিকানা গোপন রেখে বিয়ানীবাজারের ওই বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে থাকতে শুরু করেন। ওই ঠিকানা স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তার নাম তাজুল ইসলাম। তিনি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানার বড়ভিটা পূর্বপাড়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে।

নিখোঁজ হওয়ার পর নাহিদের ঘর তল্লাশি করে একটি ডায়েরি পায় পুলিশ। এতে দেনা-পাওনার হিসাব লিখে রেখেছিলেন নাহিদ। তল্লাশি করে তার ঘরে একটি বালতি ও মগে রং গুলিয়ে রাখার আলামত পাওয়া যায়।

গ্রেফতার নাহিদকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker