গোবিন্দগঞ্জ

গোবিন্দগঞ্জের মহিমাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন যেন, ছোট্ট এক বিনোদন কেন্দ্র

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন কেবল একটি যাত্রী পরিবহন কেন্দ্র নয়, ঈদের দিন এটি স্থানীয়দের জন্য একটি প্রাণবন্ত বিনোদন ও সামাজিক মিলনস্থলে পরিণত হয়েছে। চলবে তিন চার দিন। প্রতি শুক্রবার স্টেশনটি একটি মিলনমেলায় রূপ নেয়, যেখানে স্থানীয়রা সমবেত হন ।

সাধারণ দিনে বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ছোট ছোট দোকান বসে, শুক্রবার এলেই এই স্টেশন এক উৎসবমুখর পরিবেশে পরিণত হয়। প্রতি শুক্রবার বিকেল গড়াতেই স্টেশন চত্বরে ছোটখাটো দোকান বসতে শুরু করে।

সন্ধ্যা নাগাদ এটি এক মিলনমেলায় রূপ নেয়, যেখানে স্থানীয়রা সমবেত হন গল্পগুজব, কেনাকাটা এবং বিনোদনের জন্য। ঈদ, পূজা, বাংলা নববর্ষ বা বসন্ত উৎসবের সময় এখানে মানুষের ঢল নামে। এলাকার তরুণ-তরুণী, নবদম্পতি ও পরিবারবর্গ এখানে এসে প্রকৃতির সান্নিধ্যে কিছুটা প্রশান্তি খুঁজে নেন।

স্টেশনের সামনের বিস্তীর্ণ সবুজ ধানক্ষেত ও নির্মল বাতাস আগতদের মুগ্ধ করে। পাশেই রয়েছে মজিদের ঘাট ও দেওয়ানতলা ব্রিজ, যা ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্য। এসব স্থানে প্রতিদিনই পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং নবদম্পতিদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। নাগরিক জীবনের কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে তারা এখানে সময় কাটান।

স্থানীয়দের মতে, স্টেশনের পরিত্যক্ত জমিগুলোকে যদি পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করা হয়, তবে এটি একটি ছোটখাটো পার্কে পরিণত হতে পারে  তারা চান, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যেন স্টেশন চত্বরে বসার জন্য কিছু চেয়ার, ছায়াদানকারী গাছ ও ফুলের বাগান তৈরি করে। এতে পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের নিয়ে নিরিবিলি সময় কাটাতে পারবে। নাগরিক জীবনের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে প্রকৃতির সান্নিধ্যে এসে মানুষ কিছুটা প্রশান্তি পাবে।

মহিমাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনটি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত এবং এটি সান্তাহার কাউনিয়া লাইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। এখানে বেশ কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেন যাত্রাবিরতি দেয়, যার মধ্যে রয়েছে বুড়িমারী এক্সপ্রেস, করতোয়া এক্সপ্রেস এবং দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস।

এছাড়া, স্টেশনটি রংপুর সুগার মিলসের মতো গুরুত্বপূর্ণ শিল্প প্রতিষ্ঠানের সান্নিধ্যে অবস্থিত এটি স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এবং পর্যটন ক্ষেত্রেও সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে।

স্থানীয়দের মতে, মহিমাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনকে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করা হলে এটি এলাকার পর্যটন ও সামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এখানে যদি পর্যাপ্ত বসার ব্যবস্থা, ছায়াদানকারী গাছ এবং শিশুদের জন্য খেলার স্থান তৈরি করা হয়, তাহলে এটি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।

মহিমাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন ইতিমধ্যেই স্থানীয়দের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান দখল করে নিয়েছে এটিকে আরও সুন্দর ও কার্যকরী করে তোলার মাধ্যমে এর গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের যথাযথ পরিকল্পনা ও উদ্যোগ এই ছোট্ট স্টেশনটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত করতে পারে, যা এলাকাবাসীর জন্য হবে এক বিশাল প্রাপ্তি।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker