৪০ ফুট মাটি খুঁড়েও উদ্ধার হয়নি শিশু সাজিদ
রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের পরিত্যক্ত গর্তে আটকে দুই বছরের শিশু; জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ
রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের পরিত্যক্ত গর্তে (বোরিং) আটকে থাকা শিশু সাজিদকে উদ্ধারে এখনও কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ইতোমধ্যে তিনটি এক্সকাভেটর দিয়ে পাশে ৪০ ফুট গভীর একটি গর্ত করে প্রাথমিক কাজ শেষ করা হয়েছে। এখন মূল গর্ত পর্যন্ত পৌঁছাতে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস। তবে আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী বিভাগের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম এসব তথ্য জানিয়েছেন। গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহীর তানোরে দুই বছর বয়সী শিশু স্বাধীন গভীর গর্তে পড়ে যায়।
শিশু সাজিদ তার মায়ের হাত ধরে কেটে নেওয়া ধানের ক্ষেতে হাঁটছিল। হঠাৎ গর্তে পড়ে যায় শিশুটি।
সে উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের রাকিবের ছেলে। রাকিব ঢাকায় একটি জুট মিলে ব্যবস্থাপক হিসেবে চাকরি করেন।পুকুরপাড়ে গভীর নলকূপের জন্য মাটিতে খুঁড়ে রাখা ৩০-৩৫ ফুট গর্তে সাজিদ হঠাৎ তলিয়ে যাওয়ার পর পুরো উপজেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে উৎকণ্ঠা। শুরুতে শিশুটির সাড়া পাওয়া গেলেও ধীরে ধীরে সেই সাড়া মিলিয়ে যেতে থাকে।
বেলা ৪টা থেকে উদ্ধার অভিযান শুরুর খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় করতে থাকে। এতে উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত এক্সকেভেটর দিয়ে মাটিকাটা ও তা সরিয়ে নিতে প্রশাসনকে বেশ বেগ পেতে হয়। ঘটনাস্থলে প্রস্তুত রাখা হয় অ্যাম্বুলেন্স ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম।
স্থানীয়রা জানায়, রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের এই গ্রামে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। এলাকাটিতে বর্তমানে গভীর নলকূপ বসানোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে কোয়েলহাট গ্রামের তাহের নামের এক ব্যক্তি তার জমিতে পানির স্তর পাওয়া যায় কিনা-তা যাচাই করতে গর্তটি খনন করেছিলেন। পরে তিনি গর্তটি ভরাটও করেন এবং পরে বর্ষায় মাটি বসে গিয়ে সেখানে নতুন করে গর্ত সৃষ্টি হয় বলে দাবি করা হয়। সেই গর্তেই শিশুটি পড়ে যায়। শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের মোট তিনটি ইউনিট। ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী বিভাগের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলম বলেন, আমাদের ফায়ার ব্রিগেডের টিম অনুসন্ধান করছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা নিশ্চিত হবো ৪০ ফুটের মধ্যে পাচ্ছি কিনা। যদি না পাই, এবং ভিকটিম যদি আরো গভীরে চলে যায়, তবে বিকল্প পদ্ধতিতে চেষ্টা করবো। সেই পদ্ধতিতে ভিকটিমকে জীবিত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
সহকারী পরিচালক আরো বলেন, ভিকটিম আটকা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার চার ফুট দূরত্বে আমরা টানেল করেছি। সেখানে ভিকটিম আছে কিনা, আমরা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নই, অনুসন্ধান চলছে। তিনি বলেন, গতকালও আমরা সাড়া পাইনি, আজও পাইনি। ৩০ থেকে ৩৫ ফুটের মধ্যে পাওয়া না গেলে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও শিশুর স্বজনরা অনুমতি দিলে মাটির গভীরে লোহার যন্ত্র ব্যবহার করে দেখতে পারি।


