অতিথী পাখির কলতানে মুখর নওগাঁর অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র ধামইরহাটের জাতীয় উদ্যান আলতাদিঘী। প্রকৃতিতে লেগেছে নান্দনিক ছোঁয়া। দিঘীতে বসেছে অতিথী পাখির মেলা। ২ শত বছরের পুরুনো বিশাল শাল বনে সারা বছর দেখা যায় বিভিন্ন প্রজাতির রং-বেরংগের পাখি। কিন্তু শীতকালে বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির অতিথী পাখির আগমন ঘটে এখানে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারের শীতেও অতিথী পাখিরা দিঘিতে ভিড় জমিয়েছে। উপযুক্ত পরিবেশ আর নিরাপদ আশ্রয়ে এসব পাখি মেতে উঠেছে কিচির মিচির শব্দে। মোহিত করে তুলেছে এখানকার পরিবেশ। ছোট ছোট আসর বসিয়েছে পাখি গুলো। কখনো তারা আপন খেয়ালে পানিতে ডুব দিচ্ছে। আবার কখনো উড়াল দিচ্ছে নীল আকাশে। খোলা আকাশে দল বেঁধে দু-এক চক্কর দিয়ে আবার নেমে আসছে দিঘীর পানিতে। খুন সুটি করছে একে অন্যের সঙ্গে, দিচ্ছে ডুবসাঁতার। কেউ আবার পালকের ভিতরে মুখ গুঁজে পোহাচ্ছে মিষ্টি রোদের উষ্ণতা। এসব পাখি প্রচন্ড শীত আর খাদ্য সংকটে অস্তিত্ব রক্ষায় হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের মতো কম শীত প্রধান বিভিন্ন দেশগুলোতে ছুটে আসে। বছরের নভেম্বর মাসে উত্তরে অবস্থিত শীত প্রধান দেশ যেমন মঙ্গোলিয়া, সাইবেরিয়া, নেপাল হিমালয় অঞ্চলে প্রচন্ড শীত ও ভারি তুষারপাতের কারণে সেখানে টিকতে না পেরে উষ্ণতার খোঁজে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে চলে আশে। শীতের রেশ কেটে গেলে এসব পরিযায়ী পাখি আবারও ফিরে যায় তাদের চিরচেনা ভুমিতে।
অতিথী পাখির মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাজ সরালি, পাতি সরালি, বালি হাঁস, রাজহাঁস, হাঁস, ঝুটি হাঁস, চখাচখি, চিনা হাঁস, জলপিপি, ডুবুরি পাখি, হরিয়াল পাখি, রাম ঘুঘু, কাদাচোখা, পানকৌড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাংচিল এদের মধ্যে অন্যতম। শীত প্রধান বিভিন্ন দেশ থেকে আসা এসব পরিযায়ী পাখির আগমনে আলতাদিঘীকে অপরূপ সাজে সাজিয়ে তুলেছে। প্রতিদিন পাখি প্রেমিরা ছুটে আসছে এসব অতিথী পাখি দেখতে। এমন মনমুগ্ধকর পরিবেশে আলতাদীঘি থেকে একবার ঘুরে আসলে পাখিদের কলকাকলিতে মুগ্ধ হবেন সকলেই।