নওগাঁ

ফেসবুক লাইভে বাঁচার আকুতি, মৃত্যু ঘিরে রহস্য

নওগাঁর পত্নীতলায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই যুবকের নাম সুমন হোসেন। তিনি বিল ছাড়া গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে বাড়ি ফেরার পথে নাপিত পকুরা এলাকায় সুমনকে হত্যা করে গলায় দড়ি বেঁধে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে দুর্বৃত্তরা।
পরবর্তীতে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্থানীয় একই এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন ও রুবেল হোসেন বলেন, রাতে আমরা ৪ জন এক জায়গায় বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম।
এসময় রাত ১০টার দিকে ফোন দিয়ে সুমন বলতেছে ভাই আমাকে বাঁচা। কি সমস্যা তখন বলতেছে বুলবুল নামের একজন আমার থেকে দশ লাখ টাকা কাড়ে নিছে ও আমাকে মারার জন্য দাবড়াচ্ছে, লাঠি-চাকু নিয়ে তার সঙ্গে আর আট দশ জন আছে।
ফোনে অনেকবার বলছে বুলবুল আমাকে মারে ফেলে দিবে ভাই। আমাকে চাকু নিয়ে দাবড়াচ্ছে ভাই।
আমি ধান বাড়ির ভেতরে শুয়ে থেকে ফোন দিছি। যে ভাবেই হোক আমাকে বাঁচা। এর পর রাত সাড়ে ১০টার নাপিত পকুরা নামক স্থানে গিয়ে কাঠাঁল গাছে রশি দিয়ে ঝুলন্ত আবস্থায় তাকে পাই আমরা।
তার পর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার সুমনকে মৃত ঘোষণা করে।
পত্নীতলা উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য মারুফ মোস্তফা বলেন, সুমন নজিপুর সরকারি কলেজের ডিগ্রি ৪র্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
মৃত্যুর আগে সে ফেসবুক লাইভে ছাত্র জনতার কাছে বিচার চেয়েছিল। এই স্টেটমেন্ট দেওয়ার পর তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়।
এটা পুরোটাই হত্যাকাণ্ড ছিল। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।
পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. এনায়েতুর রহমান বলেন, সকালে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।
সুমন নজিপুর মসজিদ মার্কেটে কম্পিউটার ও ফটোকপির দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করতো।
গত প্রায় ১২ ঘণ্টা আগে ‘সুমন হোসেন’ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে করা লাইভে কিছু কথা বলতে শোনা যায়।
পাঁচ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ওই অডিওতে অভিযোগ করা হয়, বুলবুল নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে সুদের বিনিময়ে ৭০ হাজার টাকা ধার করেন সুমন।
সঙ্গে ফাঁকা ব্যাংক চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয়। কিন্তু পরে বুলবুল তার কাছ থেকে ১০ লাখ ৪৫ হাজার টাকা পান বলে চাপ দিতে থাকেন।
এক পর্যায়ে গত রাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তাকে ধাওয়া করা হয়।
ওই রেকর্ডে দাবি করা হয় তার মৃত্যু জন্য বুলবুল নামে ওই ব্যক্তিই দায়ী।
তবে ওসি জানান, ওই ফেসবুক আইডিটি আসলেই সুমনের কিনা কিংবা লাইভের অডিও ওই ব্যক্তিটির কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বুলবুল নামে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সুমনের আসলেই কোনো আর্থিক লেনদেন ছিল কিনা তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
এসবের সত্যতা বের হলেই আসল রহস্য উন্মোচন হবে।

Author

মো: খালেদ বিন ফিরোজ, নওগাঁ প্রতিনিধি

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ৩০ মে থেকে মিশন ৯০ নিউজে নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker