নওগাঁয় হত্যা মামলায় দুইজনের মৃত্যুদণ্ড ও ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন ২
নওগাঁয় অপহরণ করে হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ৭ নভেম্বর নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার খাদাইল গ্রামের স্কুলছাত্র নাজমুলকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। পরে তাকে হত্যার পর লাশ গুম করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত নাজমুলের বাবা বদলগাছী থানায় একই গ্রামের মিশু, পিংকি, হুজাইফা এবং সাজু আহম্মেদদের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
দীর্ঘদিন ধরে চলা এই মামলায় ২০ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন। সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত মিশু এবং পিংকিকে মৃত্যুদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও ফাঁসির আদেশ দেন। পাশাপাশি হুজাইফা ও সাজু আহমেদকে ১০ বছরের আটকাদেশ প্রদান করা হয়। যেহেতু শিশুদের বর্তমান বয়স ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে, তাই তাদেরসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে সাজা পরোয়ানা মূলে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলার রায়ে আদালত জানায়, ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নওগাঁর মান্দা উপজেলায় এক মেয়েকে বিয়ের প্রলোভনে মোরশেদ ও রবিউল নামের দুই যুবক ধর্ষণ করে এবং ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে রবিউল ওই মেয়েকে বিয়ে না করলে তার পরিবার অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেয়।
বিয়ের পরে রবিউল ওই মেয়ের স্বামীর কাছে ধর্ষণের ভিডিও এবং আপত্তিকর ছবি পাঠান। এতে ওই মেয়ের স্বামী তাকে তালাক দেন। দ্বিতীয়বার বিয়ে দিলেও রবিউল তার দ্বিতীয় স্বামীর কাছেও সেই ভিডিও ও ছবি পাঠালে দ্বিতীয় স্বামী আইনি পরামর্শের কথা বলে ওই মেয়েকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
ধর্ষণের শিকার ওই মেয়ে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করলে মান্দা থানা পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সংশ্লিষ্টতা থাকার রিপোর্ট প্রদান করে।
দীর্ঘদিন ধরে চলা এই মামলায় ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন। সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আদালত মোরশেদ ও রবিউল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। এছাড়া সুলতানা পারভিন নামে এক নারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
উভয় মামলার রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিশেষ কৌঁসুলি রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।