শেরপুরের নকলায় সাবেক প্রেমিক আরিফুল ইসলামের (২৮) ছুরিকাঘাতে সোহাগী আক্তার (২২) নামে এক কলেজছাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কলেজছাত্রীর বাবাও। সোমবার (৪ জুলাই) ভোররাত পাঁচটার দিকে উপজেলার কায়দা এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ আরিফুল ইসলামকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরিফ স্বিকার করেছে, প্রেমের সম্পর্ক না রাখায় পরিকল্পিতভাবে সোহাগীকে হত্যা করেছে।
নিহত সোহাগী কায়দা এলাকার শহিদুল ইসলামের মেয়ে। তিনি সরকারি হাজী জালমামুদ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। আর ঘাতক আরিফুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা উপজেলার কুতুরপুর ইউনিয়নের পূর্ব সিয়ারচর লালখা গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আরিফুল ইসলামের সাথে গেল রমজানে মোবাইলফোনে পরিচয় হয় সোহাগী আক্তারের। প্রায় তিন/চার কথাও হয় তাদের। এক পর্যায়ে তারা জড়ান প্রেমের সম্পর্কে। এর কিছুদিন পর দু’জনে সামনা-সামনি দেখা করেন। এক পর্যায়ে সোহাগী বুঝতে পারে আরিফুলের মানসিক সমস্যা আছে। এরপর সোহাগী আরিফুলের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
এদিকে, অনেক চেষ্টা করেও আরিফুল সোহাগীর সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়। এক পর্যায়ে সোহাগীকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। এজন্য রোববার রাতের কোনো এক সময় আরিফুল ইসলাম সোহাগীদের বাড়ীর বাইরে রান্নাঘরে অবস্থান নেয়। সোমবার ভোররাতে সোহাগীর বাবা শহিদুল ইসলাম ফজরের নামাজ পড়ার জন্য ঘর থেকে বের হন। এসময় রান্না ঘরের কাছাকাছি গেলে আগে থেকেই লুকিয়ে থাকা আরিফুল সোহাগীর বাবা শহিদুলের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা করে ছুরিকাঘাত করতে থাকে। পরে শহিদুল ডাক-চিৎকার দিলে সোহাগীসহ বাড়ির লোকজন ছুঁটে আসে। এসময় আরিফুল সোহাগীকের বাবার পর সোহাগীকেও এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। এতে বাবা-মেয়ে দু’জনেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে আশপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক সোহাগীকে মৃত ঘোষণা করে এবং মুমূর্ষু শহিদুল ইসলামকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
নকলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুশফিকুর রহমান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আরিফুলকে আটক করেছে। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরিফুল জানায়, তার সাথে সম্পর্ক না রাখায় পরিকল্পিতভাবে সোহাগীকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় আরিফুলের বিরুদ্ধে নিহতের মা মাজেদা বেগম (৫০) বাদী হয়ে নকলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আরিফুলকে বিকেলে আদালতে পাঠানো পর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।