আগামী ২৬ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে জমে উঠেছে চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণে প্রার্থীরা চালাচ্ছেন প্রচার প্রচারণা। নির্বাচনী প্রচারণায় জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে দেখা মিলেছে ভিন্ন এক দৃশ্য। কর্মী সমর্থক না থাকলেও বউয়ের ইচ্ছে পূরণে বউকে নির্বাচনে জয়ী করতে হ্যান্ড মাইক হাতে পাড়া-মহল্লা, দোকান-পাট ও রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন স্বামী ফজলুল হক ফজু করছেন ভোট প্রার্থনা।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, জামালপুরের সরিষাবাড়ীর পার্শ্ববর্তী ধনবাড়ি উপজেলার পাঁচনখালি গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে মো: ফজলুল হক ফজু। খুব ছোটবেলায় মা-বাবা মারা যাওয়ায় লালন-পালন হয়েছেন মামা’র কাছে। সেই থেকে থাকছেন সরিষাবাড়ী উপজেলার চরহাটবাড়ি গ্রামে। পেশায় একজন মাছ বিক্রেতা। বিয়েও করেন একই গ্রামে। স্ত্রী মোছা: মর্জিনা বেগম। বিয়ের পর থেকে দেখেন মর্জিনা পরোপকারী। স্ত্রীর ইচ্ছে জনপ্রতিনিধি হয়ে যদি মানুষকে সেবা যেতো। তাই স্ত্রীর ইচ্ছে পূরণ করতে অন্যের কাছ থেকে একটি হ্যান্ড মাইক চেয়ে নিয়ে তা দিয়ে বউ ও একমাত্র ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে নেমেছে প্রচার-প্রচারণায়। বউ মর্জিনা বেগম সরিষাবাড়ী উপজেলার ৩নং ডোয়াইল ইউনিয়নের ১, ২, ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সূর্যমুখী ফুল প্রতীক নিয়ে সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তিনি ছাড়াও এ ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আরও পাঁচজন।
এলাকাবাসী বলেন, ফজলুল হক ও তার বউ মর্জিনা বেগম গরীব মানুষ। মাছ বিক্রি করে চলে তাদের সংসার। গরীব হলেও তারা পরোপকারী। কর্মী সমর্থক তেমনটা নেই তাই স্বামী স্ত্রী ও একমাত্র ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে হ্যান্ড মাইক দিয়ে প্রচার-প্রচারণা করে ভোট প্রার্থনা করছে। তার বউ নির্বাচন করছে জয়ী হয়ে জনসেবা করার জন্য। তারা আরো বলেন,মর্জিনা বেগমের স্বামী বিভিন্ন হাট বাজারে মাছ বিক্রিকরে সংসার চালায়। ঋণ করে টাকা নিয়ে মনোনয়ন ও পোষ্টারে খরচ করে যাচ্ছে। নির্বাচনে জয়ী হতে না পারলে ভিক্ষে করে সংসার চালাতে হবে তাদের।
প্রার্থী মর্জিনা বেগম বলেন, আমি গরীব মানুষ। নির্বাচন করছি জনসেবা করার জন্য। আমার টাকা পয়সা নেই, কর্মীও নেই। স্বামী, ছেলে ও সে তিনজনেই প্রচার-প্রচারণা করে সবার কাছে ভোট চাইছি। জনগনের ভোটে সে নির্বাচিত হবেন বলে আশা করেন মর্জিনা বেগম।
এ ব্যাপারে প্রার্থীর স্বামী ফজলুল হক ফজু বলেন, স্ত্রীর ইচ্ছে পূরণ করতে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভোট ভিক্ষা করছেন। কর্মী নেই পরিবারের তিন সদস্য মিলেই প্রচারণা করে যাচ্ছি। লোভ লালসা নেই। জয়ী হলে পেশার কোন পরিবর্তন হবে না। আগেও মাছ বিক্রি করতেন পরেও মাছই বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করবেন এবং এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ করবেন।