সরিষাবাড়ী

সরিষাবাড়ীতে শ্রী’শ্রী কালীমাতা বার্ষিক পূজা উৎসব পালিত

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সনাতন সম্প্রদায়ের প্রায় ২০১ বছরের পুরোনো শ্রী’শ্রী খাগুড়িয়া কালীমাতা বাষির্কী পূজা উদযাপিত হয়েছে। শনিবার (১১ডিসেম্বর) উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের খাগুরিয়া কালীমাতা মন্দিরে দিনব্যাপী এ বাষির্কী পূজা পালন করা হয়।

খাগুড়িয়া কালী মন্দির সূত্রে জানা যায়, বৃটিশ শাসন আমল থেকে এ পূজা প্রতি বছর এই দিনে পালিত হয়ে আসছে। তৎকালীন এলাকার ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গ এ মন্দির প্রতিষ্ঠিত করেন। এই অঞ্চলটিতে জেলে সম্প্রদায়ের লোক বেশি বাস করতো। তার পাশেই বয়ে যাওয়া ঝিনাই নদী থেকে মাছ শিকার করে নিজেদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করতো। মাছ শিকার করতে গিয়ে জেলেরা দুটি পুরাতন মূর্তি পায়।

পরে মূর্তি দুটি নিয়ে খাগুড়িয়া এলাকায় পাটের শলা দিয়ে মন্দির নির্মাণ করে সেখানে রেখে তারা পূজা অর্চনা শুরু করে। দীর্ঘ দিন পরে দেশ বিভক্ত হলে পাকিস্তান আমলের প্রথম দিকে চিকিৎসক রামকমল পন্ডিত আবারো মন্দিরটি পুনঃনির্মাণ করেন।

তখন থেকে ভারতসহ দেশের ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, জামালপুর ও শেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্তরা এই উৎসবে সমবেত হন।

মন্দিরের দায়িত্বে থাকা পৌরহিত্য নিরঞ্জন চক্রবর্তী জানান, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভক্তরা কালীমাতার মন্দিরে এসে পূজা করে তাদের মনের বাসনা পূরণ করে যান।  কালীমাতার কাছে প্রার্থনা মা যেন এ জগৎ থেকে এই মহামারি করোনা রোগ থেকে মানবকে রক্ষা করেন।

পুণ্যার্থী টাঙ্গাইলের সুমন কর্মকার, ময়মনসিংহের কৃষ্ণা রানী, জামালপুরের প্রিয়াংকা রানী, বগুড়ার রানী সরকারসহ অনেক ভক্তবৃন্দ বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কালীমাতার মন্দিরে মাকে পূজা করতে এসেছি। আমাদের অনেকের মানত থাকে যেমন মেয়ের বিয়ে, চাকরি, রোগমুক্তি, সন্তানদের ভালো করে পড়ালেখা ও ব্যবসায় উন্নতিসহ অনেক ধরনের ইচ্ছা পূরণ হলে কালীমাতাকে পূজা দিয়ে যাই। আর কালীমাতার আশীর্বাদও নিয়ে যাই।

এ বিষয়ে শ্রী শ্রী কালীমাতা মন্দিরের সভাপতি বলেন, প্রতি বছর এই দিনে কালীমাতার বাষির্কী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। সব ধরনের সুব্যবস্থা কমিটি থেকে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্তা করা হয়েছে।

এ সময় বার্ষিক পূজা আয়োজন অনুষ্ঠান পরিদর্শন করেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাদশা, সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রকিবুল হক, জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি প্রদীপ কুমার ঘোষ, উপজেলা কমিটির সভাপতি নিখিল চন্দ্র পাল ও মন্দির কমিটির সাধারন সম্পাদক কালাচাঁন পাল প্রমূখ।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker