জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ভাতার টাকা নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন সুবিধা ভোগীরা। ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের ঝামেলা কমাতে শুরু হয় মোবাইলে ভাতা পরিশোধের কার্যক্রম। ঠিক তখন থেকে শুরু হয়েছে ভোগান্তি। ভাতা গ্রহণকারীদের মোবাইলে ভাতার টাকা না এসে অন্য নাম্বারে চলে যাচ্ছে। বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতার সুবিধা ভোগীদের অনেকে এ সমস্যার সমাধান পাচ্ছেন না বলে প্রায়ই অভিযোগ করেন। এতে ব্যাহত হচ্ছে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
উপজেলার ভাটারা ইউনিয়নের মহিষাবাদুরীয়া গ্রামের জরিনা বেগম বলেন, তিনি ভাতার টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে পেতেন। সেটাই ভালো ছিল। ডিজিট্যাল নিয়মে তিনি ঠিকমত টাকা পাচ্ছেন না। পরে সমাজ সেবা কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তার টাকা অন্য কারো মোবাইলে চলে গেছে। সমাজ সেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সহযোগীতা চাইলে তারা পরে আসতে বলেন।
উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের অফিস চলাকালীন সময়ে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা বঞ্চিতরা টাকা না পাওয়ার কারণ জানতে এসে প্রায়ই ভীড় জমান। প্রায় সকলের অভিযোগ তাদের ভাতার টাকা অন্য কারো মোবাইল নাম্বারে চলে গেছে।
তাদের একজন জরিনা বেওয়া। একই সাথে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে অনেকে ৩ বার টাকা পেয়েছে। তবে তিনি মাত্র ১ বার পেয়েছেন। তিনি বলেন, আগে ব্যাংকে টাকা দিত। সেটাই ভাল ছিলো। নতুন করে কার্ড (বই নং-২৪৫৫) করে দেওয়ার পর অনেকে তিন বার টাকা পেয়েছে। আর তিনি মোবাইলের মাধ্যমে একবার টাকা পেয়েছেন। এখন টাকা পাওয়া যায় না।
শিরীনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, তিনি ঠিকমতো তার মোবাইল নাম্বার দিয়েছেন। তারপরও তার মোবাইলে টাকা আসেনি। তার বইয়ের হিসাব নং- ৩৩১১৬৮৬৩০৩।
পৌর এলাকার শিমল্লাপল্লী গ্রামের খোদেজা বেগমের মতো অনেকের অভিযোগ একই রকমের। খোদেজা বেগম বলেন, বয়স্ক ভাতার টাকা পেতে তিনি নির্ধারিত মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। কাগজপত্রে তিনি ওই নাম্বারই দিয়েছেন। অথচ তার টাকা চলে গেছে অন্য একটি ভুল নাম্বারে। সেই নাম্বারে কল দিলে মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এখন বই হাতে নিয়ে (বই নং-১২৩১) জানতে এসেছেন কিভাবে তার টাকা ফিরে পাবেন।
উপজেলার পিংনা ইউনিয়ন থেকে আসা প্রতিবন্ধী রফিকুল ইসলাম বলেন, এক সাথে অনেকের কার্ড হয়েছে সবার মোবাইলে টাকা এসেছে ৯ হাজার, তার ফোনে মাত্র ২ হাজার ২‘শ টাকা এসেছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা অনেকেই বলেন, প্রথম ধাপ ও দ্বিতীয় ধাপে তারা টাকা পেয়েছেন। কিন্তু তৃতীয় ধাপে তারা আর টাকা পাননি। সমাজ সেবা কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন তাদের টাকা অন্য নাম্বারে চলে গেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, এমন অভিযোগ এখন আর তেমনটি নেই। যা ছিল সমাধান করে দেওয়া হয়েছে। নতুন করে কারো সমস্যা দেখা দিলেও তার সমাধান করে দেওয়া হচ্ছে।