জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে গাছের ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে মো. সুরুজ মিয়া (৭০) নামে এক বৃদ্ধ পিতাকে পিটিয়ে পা ভেঙ্গে দিয়েছেন তার বড় ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেন।
বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) দুপুরে উপজেলা আওনা ইউনিয়নের স্থল পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় আহত অবস্থায় ময়মনসিংহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বৃদ্ধ সুরুজ মিয়া। অভিযুক্ত মোয়াজ্জেম হোসেন আওনা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুবদল নেতা।
আহতের পরিবার ও স্থানীয়দের সুত্রে জানা যায়, আওনা ইউনিয়নে বসবারত বৃদ্ধ সুরুজ মিয়ার দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে। তাদের সবার বিবাহ দিয়েছেন। বড় ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেন ও ছোট ছেলে জিটু মিয়া। ছেলেরা প্রতিষ্ঠিত হলেও বাবাকে ভরণপোষণ দিতে অনিহা প্রকাশ করেন সব সময়। তাই বৃদ্ধ সুরুজ মিয়া নিজের সংসার বাঁচাতে স্ত্রীকে নিয়ে ৭০ বছর বয়েসে অন্যের সাহায্য সহযোগীতায় দিনপার করেন।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মোয়াজ্জেম হোসেনের বর্গা দেওয়া আখ খেতে কাঁঠাল গাছের ছাঁয়া পড়ায় ডাল কেটে দেন বর্গরাদার এবং মোয়াজ্জেম। সংবাদ পেয়ে গাছের ডাল কাটার বিষয়ে জানতে চান সুরুজ মিয়ার ছোট ছেলে জিটু মিয়া
পরে শুরু হয় দুই ভাইয়ের কথা কাটাকাটি। তৎক্ষণাৎ সংবাদ পেয়ে সুরুজ মিয়া ছুটে আসেন। একপর্যায়ে দুই ভাইয়ের হাতাহাতি সৃষ্টি হলে মোয়াজ্জেম হোসেন উত্তেজিত হয়ে বৃদ্ধ বাবা সুরুজ মিয়ার পায়ের উপরে লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করে। এতে সরুজ মিয়ার বাম পায়ের হাটুর উপরের অংশ ভেঙে যায়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সরিষাবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার আহত সুরুজ মিয়াকে ময়মনসিংহ হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসক।
আহতের স্ত্রী সাজেদা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী সহ আমাদের দুজনকে বড় ছেলে কোন খরচ দেয় না। আমাদের মত করেই আমরা চলি। আজ হটাৎ গাছের ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে আমার স্বামী পা টা একেবারে ভেঙে দিয়েছে। ইতিপূর্বে পড়ে গিয়ে তার ডান পা টাও ভেঙে গেছে। এখন তার দুইটি পা পঙ্গু হলে গেলো। এর সঠিক বিচার চাই আমি।
সুরুজ মিয়া ছোট ছেলে জিটু বলেন, ‘বড় ভাই বাবাকে দেখতেই পারে না। আমার সাথে উত্তেজিত হয়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করে বাবার পায়ের হাড় ভেঙে দিয়েছে। এখন সে পঙ্গু আর মনে হয় না তার ভালো হবে। ডাক্তার বলছে অবস্থা খুব খারাপ তার। বড় ভাইয়ের শাস্তি হওয়া উচিৎ। সে বাবাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। এখন ময়মনসিংহ হাসপাতালে আছে। চিকিৎসা শেষ হলে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
এঘটনায় অভিযুক্ত মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘আমি তাকে মারিনি, সে টিউবওয়েল পারে থেকে ধাক্কায় লেগে হয়ত পড়ে গেছে। তবে তিনি তাকে আঘাত করেনি বলে জানান।
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী থানার উপপরির্দশক বিকাশ চন্দ্র সরকার জানান, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি, তবে এঘটনায় এখনও কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।