জামালপুর

ঘুরে আসুন জামালপুরের ‘জামাই মেলা’

স্বপন মাহমুদ, জামালপুর প্রতিনিধি:

প্রতিবছরের মতো এবারও দ্বিতীয় বারের মতো ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনায় জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার চরপাকেদহ ইউনিয়নের পলাশপুর বাজার এলাকায় পাঁচ দিনব্যাপী ‘জামাই মেলা’। 

পোষ মাসের প্রথম দিন গত শনিবার থেকে শুরু হয়েছে। আজ রোববার মেলার দ্বিতীয় দিন চলছে। মেলা চলবে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। স্থানীয়ভাবে এ মেলাকে অনেক নামেই ডাকা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, জামাই মেলা, বৌ মেলা, পোড়াদহ মেলা বা মাছের মেলা। মেলার প্রথম দিনেই হাজারও মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল।

Image

জামাই মেলার মূল চরিত্র ‘জামাই’ সম্পর্কের মানুষ গুলো, মেলার সময় আশপাশের গ্রামগুলোতে মেয়ে আর জামাইকে দাওয়াত করে আনা হয়। জামাতারা মেলা থেকে বড় বড় মাছ কেনেন শ্বশুর বাড়ির জন্য। আবার জামাইকে মেলায় কেনাকাটার জন্য শশুর-শাশুড়ি টাকা দেন। সেই টাকা দিয়েই মেলা থেকে কেনাকাটা করে শ্বশুর বাড়িতে যান। গত দুই বছর ধরে স্থানীয় এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ ‘জামাই মেলা’ শুরু হয়েছে।

জামাই মেলায় ৩০০টি বিভিন্ন ধরনের দোকান রয়েছে। এর মধ্যেই এক পাশে সারি সারি মাছের দোকান। সেগুলোতে আছে, বোয়াল, কাতল, বাগাড়, আইড় চিতলসহ বিভিন্ন জাতের মাছ। সেসব মাছের ওজন ৫ থেকে ২০ কেজি বা তারও বেশি। মেলায় বিক্রি হচ্ছে হরেক প্রজাতির মাছ, মিষ্টিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।

মেলার আয়োজক কমিটি ও স্থানীয়রা বলেন, ‘গত বছর থেকে জামাই মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এই মেলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আত্মীয়-স্বজনদের সম্পর্ক আরো গভীর করার। এই মেলা উপলক্ষে কয়েক এলাকার লোকজন তাদের আত্মীয়-স্বজন ও মেয়ে জামাইকে দাওয়াত করে ডেকে আনা হয়। জামাই মেলা থেকে জামাতারা কেনাকাটা করে শ্বশুর বাড়ি যান। মেলায় আত্মীয়-স্বজন, এলাকার জামাইয়েরা ঘুরতে আসে।

মেলায় ঘুরতে আসা আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে একজন বলেন, ‘এই মেলা মেয়ে জামাইকে দাওয়াত করে আনা হয়েছে এবং পুরনো আত্মীয়-স্বজনসহ সবাইকে দাওয়াত করে এনেছি। এই মেলার মধ্যে আত্মীয়স্বজনদের সম্পর্ক আরো বেশি সুন্দর ও গভীর হবে। জামাইকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছি, মেলা থেকে কেনাকাটা করার জন্য। মেলা উপলক্ষে কয়েকটি গ্রামের মানুষ তাদের মেয়ে জামাইকে দাওয়াত করে এনেছে।

আবদুল বারিক নামে একজন বলেন, ‘আমার শশুর দাওয়াত করে এনেছে। গতকাল এসেছি শ্বশুর বাড়িতে, আজ মেলায় আসার আগে শশুর হাজার টাকা দিয়েছে। এ সময় শাশুড়ি আর কিছু টাকা দিয়েছে লুকিয়ে। মেলা থেকে বড় একটি মাছ কিনেছি। শশুর শাশুড়ির জন্য পান সুপারি নিয়েছি। আমার একটি ছোট শালিকা রয়েছে তাঁর জন্য এখন কিছু মিষ্টি জাতীয় খাবার নিয়ে যাবো শ্বশুরবাড়িতে।

জামাই মেলার শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক আশরাফুল আলম বলেন, ‘গত বছর থেকে জামাই মেলার আয়োজন শুরু করেছি। গত বছরের মেলায় জাঁকজমক ও সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে আয়োজন। এবছরে প্রথম দিনেই মেলায় ছিল উপচে পড়া ভিড়। মেলার সুশৃংখলভাবে পরিচালনা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। মেলায় শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা খুবই দায়িত্বশীল।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker