কোরবানির ঈদকে ঘিরে সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার উত্তর পারুলিয়ায় গরু ও ছাগলের হাট জমে উঠেছে। এবার ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধ থাকায় খুশি খামারি ও ব্যবসায়ীরা। সীমান্ত এলাকা দিয়ে যেন কোনভাবেই ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবির পক্ষ থেকেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া খামারিরা এবার গরু মোটাতাজাকরণে ওষুধ প্রয়োগ থেকেও বিরত রয়েছেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, জেলায় খামারি রয়েছে ১২ হাজার ৮৮৯ জন। এসব খামারিদের কাছে এ বছর কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ৭০৮টি। তবে জেলার চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৫৭৭টি। এর মধ্যে গরু রয়েছে ৪৫ হাজার ২৬৫টি, মহিষ ৭৩৭টি, ছাগল ৭৬ হাজার ৫৯২টি ও ভেড়া রয়েছে ৬ হাজার ৩১১টি। সংশ্লিষ্টদের দাবি, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও স্থানীয় চাহিদার তুলনায় পশু বেশি রয়েছে।
খামারি মজনুর রহমান মালি বলেন, আমি ১৯৯৬ সাল থেকে গরু পালছি। এ বছর ৫০ থেকে ৬০টি গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা আছে। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর গরুর খাবারের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, সেক্ষেত্রে গরুর দাম বেশি হওয়াটা স্বাভাবিক। গত বছরের তুলনায় একটু দাম বেশি না হলে খামারিরা বাঁচবে না। কমবেশি পশুর হাটে কেনাকাটা শুরু হয়েছে। শহরে যারা আছে বেশিরভাগ মুখোমুখি এসে কেনাকাটা করে। আমরাও এখন থেকে বিক্রি শুরু করেছি। তবে অনেকের জায়গা না থাকায় কিনে খামারে রেখে দেয় আমরাও তাদের এ সুযোগ দেই।
এমনই এক গরু পালনকারী তালা উপজেলার শিবপুর গ্রামের রুবেল মোল্লা বলেন, আমার একটি গরু আছে। এখনও বিক্রি করিনি। আশা করছি, দুই লাখ টাকায় গরুটি বিক্রি হবে। এর আগে একটি হাটে নিয়েছি। গরুটিকে কোনো ওষুধ খাওয়ানো হয়নি। ওষুধের মাধ্যমে গরু মোটাতাজা করলে ক্রেতারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, দামও কম হয়।
এদিকে গরুর পাশাপাশি ছাগলেরও চাহিদা রয়েছে ক্রেতাদের কাছে। এ উপজেলার চারকুনিয়া গ্রামের এক ছাগল পালনকারী আবুল বাসার জানান, ক্রেতাদের ছাগলের মোটামুটি চাহিদা আছে। আমি দুইটা ছাগল নিয়ে আসছি। ১৮ হাজার টাকা হলে দিয়ে দিবো।
এ বিষয়ে দেবহাটার গরু হাটের ইজারাদার বলেন, সপ্তাহে রবিবার এ হাট বসে। আজ হাটের দিন ছিল, মোটামুটি কোরবানির পশু আসা শুরু হয়েছে। তবে আগামী দিন হাট আরও বড় হবে। হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি বেড়েছে। ঈদের ১০ থেকে ১৫ দিন আগে হাট জমে উঠবে।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: এস এম মাহবুবুর রহমান জানান, সাতক্ষীরাতে বিগত বছরের তুলনায় এবার প্রায় ২৯ হাজার পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। দানাদার জাতীয় খাদ্যের দাম বৃদ্ধি হাওয়ায় সাতক্ষীরা জেলার খামারিরা ঘাসের উপর নির্ভরশীল হয়েছে। ঘাস পাঁচ থেকে সাত টাকা কেজি এবং দানাদার জাতীয় ৫৫ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত। ঘাসের উপর মোটামুটি ৭০ শতাংশ কৃষক নির্ভরশীল হয়ে গেছে। ফলে গতবারে যেমন বাজার স্বাভাবিক ছিল, অনুরূপভাবে এবারও স্বাভাবিক থাকবে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.