দেশে নারী ও শিশুর ওপর সহিংসতার আশঙ্কাজনক বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর মধ্যে সম্প্রতি মাগুরায় ঘটে যাওয়া ৮ বছরের এক শিশু ধর্ষণের ঘটনা স্তম্ভিত করে দিয়েছে সারাদেশকে। নৃশংস এ ঘটনার শিকার শিশুটি যখন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে, ঠিক তখনই ফেসবুকে ওই শিশুর ছবি দাবি করে এক ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও গ্রুপ থেকে ছবিটি প্রচার করে ছাপা হচ্ছে আবেগঘন স্ট্যাটাস।
ভাইরাল ছবিটিতে দেখা যায়, আনুমানিক ৭ থেকে ৮ বছর বয়সী এক শিশুর দেহ মেঝেতে পড়ে আছে। লাল রঙের একটি গামছা দিয়ে তার শরীর ঢেকে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া শিশুটির পাশে শাঁখা-চুড়ি ও লাল শাড়ি পরিহিত এক নারীর হাতও দেখা গেছে।
তবে, ভাইরাল হওয়া ছবিটির সঙ্গে মাগুরায় ৮ বছর বয়সী সেই শিশুর ধর্ষণের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছে তথ্যের সত্যতা যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার। বরং, ভাইরাল হওয়া শিশুর ছবিসহ অন্য ছবিগুলো একজন আলোকচিত্রীর ধারণামূলক ফটোশুটের অংশ।
বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে অনিন্দ্য দে নামের এক আলোকচিত্রীর ফেসবুকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। সেই পোস্টে থাকা ছবির সঙ্গে ভাইরাল ছবিগুলোর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়াও অনিন্দ্য দে’র ফেসবুক আইডি থেকে ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি পোস্টেও একই ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
অন্যদিকে মাগুরায় ৮ বছর বয়সী শিশু ধর্ষণের আলোচিত ঘটনাটি ঘটেছে গত ৫ মার্চ। অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিটি ধর্ষণের ঘটনার আগে থেকেই অনলাইনে বিদ্যমান।
সুতরাং, সম্প্রতি মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত দাবি করে একজন আলোকচিত্রীর পুরোনো মঞ্চস্থ ফটোশুটের ছবি প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে অনিন্দ্য দে কর্তৃক প্রচারিত ছবিগুলো এর আগেও চট্টগ্রামে এতিম কিশোরী ধর্ষণের ঘটনার ছবি দাবি করে প্রচার করা হয়েছে। সে সময়ও বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার টিম। ওই সময় আলোকচিত্রি অনিন্দ্য দে জানিয়েছিলেন।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একটি শিশু অপহরণের ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি ধারণামূলক ফটোশুটে ওই ছবিগুলো তুলেছিলেন এবং সে সময় নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করেন। আর ছবিতে ধর্ষকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অন্তু এবং ভুক্তভোগী কিশোরীর ভূমিকায় ছিলেন অর্পিতা। তারা দুজনই অনিন্দ্য দে’র ছোট ভাই-বোন।