খুলনা

অবশেষে মুখ খুললেন রহিমা, বললেন অপহরণের শিকার

অবশেষে মুখ খুলেছেন দেশজুড়ে আলোচিত ‘নিখোঁজ’ ঘটনার কেন্দ্রে থাকা রহিমা বেগম। খুলনা থেকে নিখোঁজের ২৯ দিন পর ফরিদপুর থেকে জীবিত উদ্ধার হবার পর থেকে মুখে কুলুপ এটে ছিলেন ৫৫ বছরের এই নারী। পরে প্রায় ১৬ ঘন্টা পর তিনি পুলিশের কাছে মুখ খুলেন তিনি।

মুখ খুলেই রহিমা বেগম জানালেন তাকে অপহরণ করা হয়েছিলো। রোববার দুপুর ১টার দিকে সন্তানের মুখোমুখি করার পর তিনি মুখ খোলেন। মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান দুপুর আড়াইটার দিকে এ তথ্য জানান।

উদ্ধারের পর থেকে কোনো কথাই বলছিলেন না রহিমা বেগম। রোববার বেলা ১টার দিকে জেলা পিবিআই কার্যালয়ে মেয়ে মরিয়মসহ তাকে চার মেয়ের মুখোমুখি আনা হয়। এ সময় মেয়েরা মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে তিনি অপহৃত হয়েছিলেন বলে দাবি করেন।

পিবিআই কর্মকর্তা জানান, রহিমা বেগমের দাবি করেছেন, গত ২৭ আগস্ট রাতে নিজ বাড়ির নিচ তলা থেকে পানি আনতে গিয়ে তিনি অপহৃত হন। চার ব্যক্তি তাঁকে জাপটে ধরে নাকে রুমাল চেপে ধরেন। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর তাঁর কিছু মনে নেই।

পুলিশ সুপার বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে রহিমা বেগম অপহৃত হয়েছেন বলেই দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, তাঁকে চারজন মিলে অপহরণ করে নিয়ে যান। কিন্তু তাঁরা কারা বা কোথায় নিয়ে যান, সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারেননি। একপর্যায়ে তাঁরা সাদা স্ট্যাম্পে কিছু সই নেন।

সই নেয়ার পর তাঁকে একটা নির্জন জায়গায় ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু জায়গাটা কোথায় সেটা তিনি বুঝতে পারেননি। এরপর তিনি মনি নামের একটি মেয়ের বাড়িতে ছিলেন। তবে সেই বাড়িটি কোথায় তিনি বলতে পারছেন না। তিনি মেয়েটিকে চেনেনও না।

এরপর ওই মেয়ে তাঁকে এক হাজার টাকা সংগ্রহ করে দেন। পরে সেই টাকা রহিমা মকসুদপুরে চলে আসেন। সেখান থেকে তিনি বোয়ালমারীতে আসেন। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁর বাড়ির ২৮ বছর আগের ভাড়াটিয়া আবদুস কুদ্দুস মোল্লার বোয়ালমারীর বাড়িতে যান।

কুদ্দুস এক সময় খুলনার দৌলতপুরের সোনালী জুট মিলে চাকরি করতেন। তিনি ভেবেছিলেন, সেখানে গেলে আশ্রয় পাওয়া যেতে পারে। যখন যেখানে ছিলেন, তাঁরা তাঁকে কাপড়-চোপড় দিয়েছেন বলে জানান রহিমা বেগম। সেগুলো তিনি সংগ্রহে রেখেছিলেন।

রহিমা বেগম পুলিশকে জানান, খুলনায় আসতে ভয় পেয়েছিলেন। তাই খুলনায় নিজের বাড়িতে না গিয়ে ভেবেছিলেন, কুদ্দুসের বাড়ি যাওয়ার পর মেয়েদের খবর দেবেন। এরপর মেয়েদের সঙ্গে চলে যাবেন। কিন্তু তার আগেই পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

পিবিআই জানিয়েছে, বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে কুদ্দুসের বাড়িতে যাওয়ার পর রহিমার অবস্থান সম্পর্কে এক জনপ্রতিনিধির নজরে আনেন স্থানীয় এক ছেলে। জনপ্রতিনিধি দ্রুত খুলনায় যোগাযোগ করেন আরেক জনপ্রতিনিধির সঙ্গে। তিনি পুলিশকে জানান।

পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, আমরা রহিমা বেগমের বক্তব্য খতিয়ে দেখছি। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে তিনি জবানবন্দি দেবেন। এরপর আদালতের সিদ্ধান্ত মতো কার্যক্রম চলবে। আইন অনুযায়ী সবকিছু করা হবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker