ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহে ৩ জনকে গুলি করে হত্যা, নেপথ্যে কী

ঝিনাইদহের শৈলকুপার একটি ধানক্ষেত থেকে চরমপন্থী নেতা হানিফ আলী ও তার শ্যালকসহ তিনজনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় একটি বাহিনী হত্যার দায় স্বীকার করে গণমাধ্যমকর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়েছে। যদিও ওই বার্তায় হত্যার কারণ জানানো হয়নি। তবে গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, এই তিন খুনের নেপথ্যে রয়েছে আলমডাঙ্গার কায়েতপাড়ার বাওড় দখল।

ওই বাওড়ে কোটি টাকার বেশি মাছ ছাড়া হয়। বছরখানে আগে মৎস্যজীবী লীগ নেতা পরিচয়ে হানিফ বাওড়ে মাছ ধরা ও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে। এতে ওই এলাকার বিবাদমান একাধিক গ্রুপের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এরই জেরে হানিফসহ তার দুই সঙ্গীকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হতে পারে।

এদিকে জাসদ গণবাহিনীর জনৈক কালু পরিচয়ে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তায় বলা হয়েছে, ‘ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনাবাসীর উদ্দেশে জানানো যাইতেছে যে, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি নামধারী কুখ্যাত ডাকাত বাহিনীর শীর্ষ নেতা অসংখ্য খুন, গুম, দখলদারি, ডাকাতি, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হরিণাকুণ্ডু নিবাসী মো. হানিফ ও তার দুই সহযোগীসহ জাসদ গণবাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহত হয়েছেন।

তাদের লাশ রামচন্দ্রপুর ও পিয়ারপুর ক্যানালের পাশে রাখা আছে। অত্র অঞ্চলের হানিফের সহযোগীদের শুধরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো। অন্যথায় আপনাদের একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে। কালু জাসদ গণবাহিনী।’

গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার পর শৈলকুপার রামচন্দ্রপুর শ্মশান ঘাট এলাকার একটি ধানক্ষেত থেকে চরমপন্থী নেতা হানিফ আলী ও তার শ্যালক লিটন (৩৫) এবং কুষ্টিয়ার পিয়ারপুর গ্রামের আরজাদ আলীর ছেলে রাইসুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে হানিফ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। তাদের মাথায় ও বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে। পাশে দুইটি মোটরসাইকেল ও নিহতদের ব্যবহৃত হেলমেট পড়ে ছিল।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৩ সালে ৫ ডিসেম্বর একই স্থানে শৈলকুপার শেখপাড়া গ্রামের শহীদ খা, ত্রিবেনী গ্রামের শাহনেওয়াজ, একই গ্রামের ফারুক, নুরু কানা ও কুষ্টিয়ার ভবানীপুর গ্রামের কটাকে গুলি ও গলা কেটে হত্যা সন্ত্রাসীরা। গত তিন দশকে কায়েতপাড়া বাওড় নিয়ে অর্ধশতাধিক মানুষ খুন হয়েছেন।

তারা বলছেন, সন্ত্রাসী হানিফ কুলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহমান, তিওরদবিলা গ্রামের লুৎফর রহমান, তাহেরহুদার আব্দুল কাদের ও পোলতাডাঙ্গার ইজাল মাস্টারসহ শতাধিক মানুষকে গুলি ও গলা কেটে হত্যা করে।

এর মধ্যে ইজাল মাস্টারকে হত্যার পর তার মাথা কেটে উঠানে ফুটবল খেলে। সেসময় বিষয়টি দেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এ বিষয়ে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান কালের কণ্ঠকে বলেন, হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker