বেনাপোল

বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরল ২১ শিশু-কিশোর

ভারতে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা খেটে দেশে ফিরল ২১ জন শিশু ও কিশোর কিশোরী। ২৮ জন ফেরত আসার কথা থাকলেও ৭ জনের শরীরে ওমিক্রন সংক্রমণ ধরা পড়ায় ভারতীয় পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে ২১ জনকে। এসময় কোলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রথম সেক্রেটারী শামিমা ইয়াসমিন স্মৃতি ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের  পরিচালক সেহেলি শাবরিন উপস্থিত ছিলেন। 

শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫ টার সময় বেনাপোল চেকপোষ্ট দিয়ে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ নো-ম্যান্সল্যান্ডে ফেরত আসাদের হস্তান্তরের সময় তাদের গ্রহন করেন। 

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  মীর আলীফ রেজা, বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান ও ইমিগ্রেশন ওসি মোঃ রাজু।

ফেরত আসারা হলেন, নড়াইল জেলার জামরিলডাঙ্গা গ্রামের নজরুল সিকদার এর ছেলে আবুদা সিকদার (৯) একই গ্রামের ইউনুসছ মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা আক্তার (১৮) ও ছেলে আয়ান (৬), বাগেরহাট জেলার মুকুল দাস এর ছেলে হৃদয়  দাস (১৬), যশোর জেলার সোনা হুসাইন এর ছেলে সাকিল সেখ (১৫), ঠাকুরগাঁও জেলার এনাতুর রহমান এর ছেলে মাসুদ রানা (১৫), বাগেরহাট জেলার নুরুল শেখ এর ছেলে রাব্বি শেখ (১২), একই জেলার নয়া মিয়ার ছেলে রাকিব মিয়া (১০), ঢাকা জেলার জাহাঙ্গীর মিয়ার মেয়ে মুন্নি (১৭), নিহার মন্ডল ছেলে পার্থ মন্ডল (৩), চিটাগাং জেলার মোহাম্মদ আলীর মেয়ে ইয়াসমীন (২০), মুন্সিগঞ্জ জেলার সাইদুর রহমান এর মেয়ে নওশীন রহমান (১৪) ও ফিউনা রাহমন (৯), বাগেরহাট জেলার আব্দুল হালিম এর মেয়ে শিমুল বেগম (২৩), ঢাকা জেলার সাবু শেখ এর মেয়ে আরিফা খাতুন (১৩),  ঝিনাইদাহ জেলার আবু তালেব সেখ এর মেয়ে সালমা খাতুন (২৫), নড়াইল জেলার মাসুদ মোল্যার মেয়ে মরিয়ম (৩), হাদিস শেখ এর মেয়ে মুসলিমা বেগম (২৫), তার মেয়ে নাইমা খাতুন (৪), শিমুল সেখ এর মেয়ে রুকাইয়া (৪) ও খুলনা জেলার অমল সরকার এর ছেলে রাকেশ সরকার (১৪)।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি মোহাম্মাদ রাজু বলেন, এরা ভারতে যেয়ে কেউ হারিয়ে যায়, কেউ পুলিশের কাছে আটক হয়ে আদালতের মাধ্যেমে সে দেশের সেইফ হোমে থাকে। আজ এ পথ দিয়ে ২৮ জনের আসার কথা থাকলেও ওমিক্রণ নামে সংক্রমণে আক্রান্তর কারনে দেশে ফিরেছে ২১ জন। ইমিগ্রেশন এর আনুষ্ঠানিকতা শেষে এদের বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হবে।

কোলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দুতাবাসের প্রথম সেক্রেটারী শামিমা ইয়াসমিন স্মৃতি বলেন, এরা কেউ কেউ পাচারের শিকার ও কেউ কেউ স্বইচ্ছায় ভারতে অবস্থানের পর সেদেশের পুলিশের কাছে আটক হয়। এরপর বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন কোলকাতা, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রানালয়ের যৌথ উদ্যেগে বিভিন্ন সেইফ হোমে অবাস্থানরত এসকল বাংলাদেশী নারী ও শিশুদের নাগরিকত্ব যাচাই বাছাই পূর্বক বিশেষ ট্রাভেল পারমিট এর মাধ্যেমে বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়েছে।

বাংলাদেশ পরারাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মহা পরিচালক সেহেলী সাবরীন বলেন, আমরা বিভিন্ন দেশে নারী শিশু পাচার হওয়াদের উদ্ধার এর জন্য কাজ করে থাকি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পাচার হওয়া ২৮ জন শিশু ও নারীদের আমারা উদ্ধার করি। এরপর ভারতে তাদের সংক্রমণ পরীক্ষার পর ৭ জনের ওমিক্রণ ধরা পড়ে। যার ফলে আমরা দেশে আজ ২১ জনকে ফিরিয়ে এনেছি। 

শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলীফ রেজা বলেন, ভারতে পাচার হওয়া শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সরকারী প্রচেষ্টায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের এনজিও সংস্থা এদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সহযোগীতা করেছেন।

যশোর মহিলা আইনজীবি সমিতির সমন্বয়কারী রেখা বিশ্বাস বলেন, পাচার হওয়া ও স্বইচ্ছায় যেয়ে হারিয়ে যাওয়া শিশুদের পরিবার থেকে অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সরকারের মাধ্যেমে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কাজ করি। এরপর ৫ মাস থেকে ৬ বছর পর্যন্ত জেল ও সেইফ হোমে থাকা শিশু কিশোর ও কিশোরীদের দেশে ফিরিয়ে আনি।

যশোর জাস্টিস এন্ড কেয়ার এর ফিল্ড অফিসার রোকেয়া বেগম বলেন, মানব পাচার এবং বিদেশে বাংলাদেশীরা আটক হলে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে জাস্টিস এন্ড কেয়ার কাজ করে থাকে। আজ দেশে ২৮ জন আসার কথা থাকলেও ৭ জনের ওমিক্রণ ধরা পড়ায় দেশে ফিরেছে ২১ জন। আমরা ইমিগ্রেশন কাস্টমস ও থানার আনুষ্টানিকতার পর তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করব এসব শিশু ও কিশোরদের।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker