বেনাপোল চেকপোস্টে কুলি শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কুলি শ্রমিকদের ছাঁটাই এবং একটি বেসরকারি কোম্পানিকে কাজ দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বেনাপোল চেকপোস্টে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন কুলি শ্রমিকরা। শ্রমিকরা তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ এনে কর্মসংস্থান কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ বেনাপোল চেকপোষ্ট এলাকায় পাসপোর্ট যাত্রীদের সেবায় কর্মরত “কুলি” শ্রমিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শর্ত আরোপ করে তাদেরকে ছাটাই এবং “গ্রীণ লজিষ্টিক” নামের এক কোম্পানীকে কাজ করার অনুমতি প্রদান করার প্রতিবাদে সেখানকার “কুলি” শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং-২০৮৪,খুলনা) এক “মানববন্ধন” কর্মসূচি পালণ করে। এ সময় শ্রমিকরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক চেকপোষ্ট বেনাপোল “প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল” সম্মুখে বিক্ষোভ মিছিল শেষে উক্ত “মানববন্ধন” কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত “মানববন্ধন” কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির সভাপতি মোবারক হোসেন (কালু) ও সাধারণ সম্পাদক ইকরামুল ইসলাম।
মানববন্ধনে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেন, “কুলিদের বিরুদ্ধে দুর্ণীতির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ “গ্রীণ লজিষ্টিক” নামের এক ব্যবসায়ীক কোম্পানী’কে চেকপোষ্ট এলাকায় কাজ করার যে অনুমোদন দিয়েছে আমরা সেই নির্দশনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমরা বলতে চাই, আমরা সাধারণ কুলি-মুজুর, দিন আনি দিন খাই অর্থাৎ অত্র চেকপোষ্ট এলাকায় পাসপোর্ট প্যাসেঞ্জারদের ব্যাগ এবং ল্যাগেজ বহন করে যে পারিশ্রমিক পায়, তাই দিয়ে আমরা আমাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে দু’বেলা-দু’মোঠো ভাত খেয়ে বেঁচে আছি। আমাদের এই কাজের মধ্যে দূর্ণীতির সুযোগ কোথায়? কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ দৃড় কন্ঠে বলেন, যারা দূর্ণীতিবাজ তাদেরকে ধরার চেষ্টা করেন, ৩০০ কুলি-শ্রমিকের কর্ম ছিনিয়ে নিয়ে আমাদেরকে বেকারত্বে ঠেলে দিবেন না। আমাদের মধ্যে যদি কেউ অপরাধ করে থাকে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিলে আমাদের কোন অভিযোগ থাকবে না। গত ৫ আগষ্ট/২০২৪ এর গণঅভ্যুনের পর ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের যে সমস্ত দলীয় নেতা-কর্মী এই চেকপোষ্টে গ্রেফতার হয়েছে, অধিকাংশ সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করেছে আমরা এবং আমাদের কুলি সদস্য ভাইয়েরা।
নেতৃবৃন্দ বলেন,গত ৫ আগষ্ট/২০২৪ পর ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পাসপোর্ট যাত্রী’র চলাচল একেবারে নেই বললে চলে। সে ক্ষেত্রে “গ্রীণ লজিষ্টিক”র ফতোয়া কতটা কার্যকরী হতে পারে তা কর্তৃপক্ষকে ভাবতে হবে। তারা যে হারে পাসপোর্ট যাত্রীদের যাতায়াতের উপর “কর” আরোপ করেছে তাতে যাত্রীরা মানতে নারাজ। অধিকতর “কর” চাপিয়ে যাত্রী যাতায়াতে বন্দর কর্তৃপক্ষ যে বাধা সৃষ্টি করছে তা থেকে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে।
এদিকে, ভারত গামী পাসপোর্টধারীরা জানান, ভ্রমন কর সরকার ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা করেছে। ভারত সরকার ভিসা ফি ১৫০০ টাকা নিচ্ছে। বন্দর সেবা চার্জ নাম করে পাসপোর্ট প্রতি ৫৫ টাকা আদায় করছে। তবে কাঙ্খিত কোন সেবা বন্দর দিতে পারেনা। এর মধ্যে নতুন করে আবার একাধিক সেবা চার্জ নির্ধারন গলা কাটা পড়বে যাত্রীদের।