যশোর

শার্শা উপজেলা শিক্ষক-কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি: (কালব) বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানি ও দুর্নীতির অভিযোগ

যশোরের শার্শা উপজেলা শিক্ষক-কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড (কালব) এর বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানি ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের পক্ষ থেকে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। ৫ জন গ্রাহকের স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে উল্লেখ আছে, শিক্ষকদের উন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠিত ক্রেডিট ইউনিয়নটি বর্তমানে দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত হয়েছে। সেই সাথে বেড়েছে গ্রাহক হয়রানি। গ্রাহকদের প্রয়োজনে ঋণ গ্রহন করা হয় যা ৫ বছরে মাসিক কিস্তির মাধ্যমে বাধ্যতামুলক পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু ঋণ গ্রহন করার পর কোন পাশ বই দেয়া হয়নি। ফলে ঋনের কিস্তির টাকা গ্রাহকের নামে জমা হয় কিনা তা গ্রাহকরা জানতে পারে না। ঋণের টাকা পরিশোধের সময়-সীমা উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই গ্রাহকদের নামে উকিল নোটিশ ও মামলা ঠুকে দেয়া হচ্ছে। ঋণ গ্রহণকালে সহজ শর্তের সুদের কথা বলা হচ্ছে কিন্তু সুদ আদায় করা হচ্ছে চক্রবৃদ্ধি হারে। তবে সুদের হার মাসিক কিংবা বার্ষিক কিনা তা কেউ স্পষ্ট জানেন না। ফলে ঋনের বোঝা টানতে হিমসিম খেতে হচ্ছে এবং দেখা যাচ্ছে ২ বছরের মাথায় গ্রাহকের নামে সুদ-আসল মিলিয়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। কাল্ব অফিসের কর্মরতদের কাছে হিসাব-নিকাশ জানতে চাইলে গ্রাহকদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। আবার ঋণ খেলাপি অনেক গ্রাহককে স্বজন প্রীতির কারণে বন্ধু ভাবা হচ্ছে। এরই মধ্যে ঋণ খেলাপির দায়ে ১৭ জন শিক্ষক-কর্মচারীর নামে লিগ্যাল নোটিশ ও ৬ জনের নামে আদালতে মামলা হয়েছে। সরেজমিনে তদন্তে গেলে অফিসে রক্ষিত গ্রাহক রেজিষ্ট্রারে হিসাবের কোন গরমিল খুজে পাওয়া যায়নি।

অভিযোগ কারীর একজন শিক্ষক বদিউজ্জামান গত ৩০ জুন ২০২০ তারিখে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ঋন গ্রহন করেন। যাহা ৫বছরে মসিক কিস্তিতে পরিশোধ করার কথা আছে। কিন্তু গত ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে ৬ লক্ষ ৩২ হাজার ১১৮ টাকা খেলাপী দেখিয়ে ১৩৮ ধারায় আদালতে মামলার লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে। একই ভাবে শিক্ষক মিজানুর রহমান গত ১৩ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে ৪ লক্ষ টাকা ঋন গ্রহন করেন। এ পর্যন্ত অর্ধেক টাকা পরিশোধ করার পরও ০৭ এপ্রিল ২০২২ তারিখে ৪ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা খেলাপী দেখিয়ে লিগ্যাল উকিল নোটিশ পালিয়েছে। একই ভাবে আরো অনেক শিক্ষকদের নামে মহামান্য আদালতে হয়রানি মূলক মামলা দিয়েছে কাল্ব কতৃপক্ষ।

কাল্ব উপজেলা শাখার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক মানের। পৃথিবীর ১১২ টি দেশে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলে। শার্শা উপজেলা শাখার এই প্রতিষ্ঠানের সদস্য সংখ্যা ৩০৯ জন। এই প্রতিষ্ঠানের ঋনের কার্যক্রম চলে মাসিক সুদের হার পরিশোধের নিয়মে। যে সব গ্রাহক ঋণ নেয়ার পর কোন কিস্তি জমা দেয় না তাদের নামে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ বাড়তে থাকে যা প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্রে উল্লেখ আছে। পরবর্তিতে গ্রাহকদের গাফিলতিতে ঋণের জট ছাড়াতে আদালতের আশ্রয় নেয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।

উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা এ বি এস এম আক্কাস আলী বলেন, কাল্ব এর ঋণ খেলাপি গ্রাহকদের পক্ষ থেকে কাল্ব এর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ আমার কাছে জমা দিয়েছে। ঋণ খেলাপি গ্রাহকদের নামে আদালতে মামলা হওয়ার পর আইনগত বিষয় নিয়ে আমাদের কিছু করার বা বলার রাস্তা নেই। আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় তাকিয়ে থাকতে হবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker