সখিপুরে গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত এক নারী গ্রেফতার
ঋণখেলাপি সংক্রান্ত ২৬টি মামলায় অভিযুক্ত, দুটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত; পরিবারের অসন্তোষ
টাঙ্গাইলের সখিপুরে গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত এক নারীকে গ্রেফতার করেছে সখিপুর থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকালে পৌর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশালের কোতোয়ালি থানার শাহ আলম মল্লিকের মেয়ে নুসরাত জাহান নুপুরের সঙ্গে ২০০৩ সালে টাঙ্গাইলের সখিপুরের আবুল কালামের বিবাহ হয়। কালাম দীর্ঘদিন যাবত প্রবাসে রয়েছেন। এই সুযোগেই কাউকে কিছু না জানিয়ে বিভিন্ন এনজিও ও ব্যক্তির কাছ থেকে ঋণ নিতে থাকেন নুসরাত নুপুর। পাওনাদারদের চাপ শুরু হলে যখন আত্মীয়রা জানতে পারে, তখন নুপুরকে জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তর দেন তার ব্যক্তিগত প্রয়োজনেই তিনি ঋণ করেছিলেন।
ঋণের বিষয়টি প্রকাশের পর স্বামী ও দেবরসহ পরিবারের অনেকের সঙ্গেই তার এ বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়। স্বামী বা স্বামীর পরিবারের কেউই এ বিষয়ে অবগত ছিলেন না এবং কোনো টাকা-পয়সা কখনো গ্রহণ করেননি। বিধায় তারা এ ঋণের কোনো দায়ভার নিতেও রাজি নন বলে জানা গেছে।
আরও জানা গেছে, অভিযুক্ত নুসরাত নুপুরের নামে ঋণ সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলা সহ মোট ২৬টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৩২৪/২৪ ও ৪২/২৪ মামলা দুটিতে তিনি ইতিমধ্যে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন বলেও জানা যায়। টাকা-পয়সার লেনদেনের ঝামেলা নিয়ে মাঝেমধ্যেই ওই নারীর সঙ্গে বিভিন্ন পাওনাদারের বাগবিতণ্ডা হতো।
গ্রেফতার হওয়া ওই নারীর দেবর মাজেদুল ইসলাম জানান,
আমার বড় ভাই দীর্ঘদিন যাবত প্রবাসী। ভাবীর ঋণ বিষয়ে আমরা কিছুই জানতাম না। যখন পাওনাদাররা টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে, তখন আমরা জানতে পারি। এমনকি আমার চেক বাড়িতে তার ঘরে থাকার সুযোগ নিয়ে তিনি আমার নামে ২০ লাখ ও ২৭ লাখ টাকার দুটি মিথ্যা মামলা করে।
অভিযুক্ত নূপুরের কাছে টাকা পাবেন এমন একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা হলে সখিপুর বাজারের একজন ব্যবসায়ী রবিদাস ও আরও এক পাওনাদার নারী জানান,
বিভিন্ন সময়ে আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন টালবাহানা করে। পরবর্তীতে আমরা মামলা করতে বাধ্য হই।
ওই নারীর স্বামী প্রবাসী আবুল কালাম মুঠোফোনে বলেন,
কোন প্রকার ঋণের বিষয়ে আমি জানতাম না। দেশে আসার পর যখন পাওনাদাররা টাকা চাইতে আসে, আমি তখন তার ঋণ বিষয়ে অবগত হই। ঋণ করার পূর্বে আমার সাথে কোন পরামর্শ করেনি এবং অবগতও করেনি। অন্যায় করে থাকলে অবশ্যই তার শাস্তি হওয়া উচিত। যে ঋণের সাথে আমি জড়িত না, সেই ঋণের দায়ভার আমি গ্রহণ করব না।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে সখিপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসাইন বলেন,
গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।