টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে প্রেসক্লাবে হামলা ভাঙচুর ও চাদা দাবির অভিযোগে সিনিয়র জুডিশিয়াল কালিহাতী আমলী আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
৩ মার্চ ( সোমবার ) প্র্রেসক্লাবের নির্বাচিত সভাপতি রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত বাদী হয়ে দন্ডবিধির ৪৪৮/৩৮৫/৪২৭/৩৮০/৫০৬/৩৪ধারা অভিযোগে ১১জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার আসামী হলেন,আউলিয়াদ গ্রামের মৃত হবিবুর রহমানের ছেলে রশিদ আহম্মেদ আব্বাসী,কালিহাতী গ্রামের আঃ জব্বারের ছেলে রফিকুল ইসলাম রফিক,এলেঙ্গা গ্রামের সুধীর চন্দ্র দাসের ছেলে দাস পবিত্র,সাতুটিয়া গ্রামের মৃত ইমাম উদ্দিনের ছেলে মনিরুজ্জামান মতিন,ঝাটিবাড়ী গ্রামের আরশেদের ছেলে মনির হোসেন।
বেতডোবা গ্রামের তপু খানের ছেলে নিহাল খান,কালিহাতী গ্রামের ফরহাদ হোসেন সিদ্দিকীর ছেলে মাসুদুল আলম সিদ্দিকী,আউলিয়াদ গ্রামের মৃত মতিউর রহমানের ছেলে আনিছুর রহমান।
শেলী,নওপাড়া গ্রামের মৃত আজাহার খানের ছেলে নাহিদ খান,আউলিয়াদ গ্রামের মৃত মতিউর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান শামীম,পৌলি গ্রামের মৃত গৌর চন্দ্র ঘোষের ছেলে সুমন চন্দ্র ঘোষ।
মামলার অভিযোগে প্রকাশ, প্রসক্লাবের নির্বাচিত সভাপতি রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত ২৬ ফেব্রয়ারি সকালে প্রেসক্লাব দোতলায় অফিস কক্ষে বারান্দায় পৌছামাত্র মামলার আসামীরা দা, লাঠি,কিরিচ,চাপাতি,ডেগার,লোহার রডসহ মারাতœক অস্ত্র সস্ত্র লইয়া ঘেরাও করিয়া দুই লাখ টাকা চাদা দাবি করে।
রফিকুল ইসলাম রফিকের নেতৃত্বে রশিদ আহম্মেদ আব্বাসীর হাতে থাকা কিরিচ মামলার বাদীর গলা বরাবর ঠেকাইয়া বলে দুই লাখ টাকা চাদা না দিলে খুন করিয়া ফেলিব।
অত্র মামলার আসামী দাস পবিত্র তাহার হাতে থাকা ডেগার বাদীর বুক বরাবর ঠেকাইয়া বলে দুই লাখ টাকা চাদা বিবাদীদেরকে না দিলে প্রেসক্লাব কালিহাতী অফিসে আসতে দিবেনা অফিসে বসতেও দিবে না।
এ কথা বলে সকল আসামীরা অফিসের গেটের তালা ও দরজার তালা ভাঙ্গিয়া ঘরের ভিতর অনুপ্রবেশ করে ঘরের ভিতর থাকা আসবাবপত্র ভাংচুর করে তাতে দুই লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে সকল আসামীরা।
জানাযায়, ২০২৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মাসে জাকঝমকপুর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সভাপতি পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বদ্বতা করেন-এরা হলেন রশীদ আহম্মেদ আব্বাসী।
,রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত,তারেক আহমেদ ও দাস পবিত্র। এর মধ্যে রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত ৪ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হন। দ্বিতীয় হন দাস পবিত্র তৃতীয় হন রশীদ আহমেদ আব্বাসী ও চতুর্থ হন তারেক আহমেদ।
সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মুশফিকুর মিল্টন ও বাদশা মিয়া এবং সুমন ঘোষ। এদের মধ্যে মুশফিকুর মিল্টন বিপুল ভোটের ব্যবধানে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই পরাজিত প্রার্থীদের শুরু হয় নানা ষড়যন্ত্র,গড়ে তুলেন রিপোর্টাস ইউনিটি নামে একটি সংগঠন।
সম্প্রীতি কালিহাতী প্রেসক্লাবে বিএনপির এক নেতা মতবিনিয় করলে প্রেসক্লাব নিয়ে পরাজিতরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা কুটুক্তি করেন এবং অনলাইনে সংবাদ করেন যাহা প্রেসক্লাবের সংবিধান পরিপন্থি। এরই প্রেক্ষিতে প্রেসক্লাবের কার্যকরী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক রশীদ আহম্মেদ আব্বাসী।
আনিছুর রহমান শেলী ও মিজানুর রহমান শামীমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। তারা নোটিশের কোন প্রকার জবাব না দিয়ে প্রেসক্লাবের সভাপতি-সম্পাদককে নিয়ে নানা অশ্লীল বাক্য প্রদান করেন। পরপর তিনটি নোটিশের জবাব না দেওয়ায় কার্যকরী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাদের সদস্যপদ স্থগিত করা হয় ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আউলিয়াবাদের বিতর্কিত সাংবাকিরা কিছু বখাটে ও নেশাখোর লোকদের সাথে নিয়ে এসে প্রেসক্লাবের তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। পরে নেশাখোর ছেলেরা প্রেসক্লাবের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে প্রেসক্লাবে সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর মিল্টন জানান, খবর পেয়ে দ্রুত প্রেসক্লাবে গিয়ে দেখি তালা ভাঙা। ভিতরে প্রযোজনীয় কাগজপত্র এলামেলো ও প্রায় লক্ষাধিক টাকা লুট হয়েছে।
কালিহাতী প্রেসক্লাবের সভাপতি রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত জানান, প্রেসক্লাব নিয়ে ষড়যন্ত্র তাদের পরাজিত হওয়ার পর থেকেই। সম্প্রতি তাদের সদস্যপদ স্থগিত করার পর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন।
বুধবার সকালে স্থানীয় নেশাখোর ছেলেদের নিয়ে রশীদ আব্বাসী ও মতিনের নেতৃত্বে প্রেসক্লাবে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এঘটনায় ৩ মার্চ ( সোমবার ) দন্ডবিধি ৪৪৮/৩৮৫/৪২৭/৩৮০/৫০৬/৩৪ধারা অভিযোগে ১১জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন তিনি।