টাঙ্গাইল

বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩, লুণ্ঠিত ফোন-টাকা উদ্ধার

চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও মির্জাপুর থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন শনিবার কালের কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় লুট হওয়া নগদ টাকা ও কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার লাউতারা গ্রামের বদর উদ্দিন শেখের ছেলে শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মহিত (২৯), শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের ইসমাইল মোল্লার

ছেলে সবুজ (৩০) ও ঢাকার সাভার উপজেলার টান গেণ্ডা  গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে শরীফুজ্জামান ওরফে শরীফ। গ্রেপ্তারকৃতদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ আরো জানিয়েছে, গ্রেপ্তার শহিদুল ইসলামের নামে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানায় একটি ও ঢাকার সাভার মডেল থানায় একটি বাস ডাকাতি মামলাসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে তিনটি লুণ্ঠিত মোবাইল ফোন, একটি ছুরি ও নগদ ২৯ হাজার ৩৭০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসা আমরি ট্রাভেলসের ‘ইউনিক রোড রয়েলস’ নামের একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে।

এর তিন দিন পর গতকাল শুক্রবার টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন বাসের যাত্রী নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চরবড়াইগ্রামের ওমর আলী। 

বাসটিতে থাকা যাত্রীদের ভাষ্য মতে, সোমবার রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাসটি ছাড়ে। রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে বাসে ডাকাতি শুরু হয়।

তিন ঘণ্টা ধরে ডাকাতি শেষে ঘুরিয়ে একই জায়গায় বাসটি নিয়ে গিয়ে রাত ৩টা ৫২ মিনিটে ডাকাতরা নেমে যায়। এরপর বাসের চালক, তার সহকারী ও সুপারভাইজর নানা টালবাহানা করতে থাকেন।

তারা বলেন, গাড়িতে তেল নেই। তবে যাত্রীদের চাপের মুখে তাঁরা রাজশাহীর উদ্দেশে বাস ছাড়েন। যাত্রীরা প্রথমে বাসটি নিয়ে মামলা করার জন্য মির্জাপুর থানায় যান।

সেখানে তখন ওসি না থাকায় তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে বড়াইগ্রামে থানা পুলিশ বাসটি আটক এবং বাসের চালক বাবলু ইসলাম, সুপারভাইজার মাহবুব আলম ও চালকের সহকারী সুমন ইসলামকে গ্রেপ্তার করেন। বুধবার তাদের আদালতে পাঠানো হলে সন্ধ্যায় শুনানি শেষে বিচারক তাদের জামিনের আদেশ দেন।

মামলার তদন্তে নেমে জেলার গোয়েন্দা পুলিশ ও মির্জাপুর থানা পুলিশের একটি দল তদন্তে নামে। পরে শুক্রবার রাতে ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানাধীন গেণ্ডা এলাকা থেকে ডাকাতদলের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন জানান, গ্রেপ্তারকৃত ডাকাতদলের সদস্যরা আন্ত জেলা ডাকাতদলের সক্রিয় সদস্য।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য ডাকাতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। গ্রেপ্তারকৃতদের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। 

এদিকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে মির্জাপুর থানার ডিউটি অফিসারের দায়িত্বে থাকা সহকারি উপপরিদর্শক (এএসআই) আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

অভিযোগ জানাতে যাওয়া ভুক্তভোগীদের নাম ঠিকানা ও মোবাইল ফোন নম্বর লিখে না রাখায় এবং দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) দয়াল।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker