
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে সূত্রহীন (ক্লু-লেস) ফরিদ উদ্দিন হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ হত্যাকান্ডে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ভাড়রা গ্রামের মো: আনোয়ার তালুকদারের ছেলে মো: অলি তালুকদার (১৯), মৃত সিরাজ মন্ডলের ছেলে মো: কামাল হোসেন (২৯), শালিয়ারা গ্রামের মো: শফিকুল আলমের ছেলে মো: সোহানুর ইসলাম ফারদিন (২০)।
বুধবার দুপুরে প্রেস বিফিং এর মাধ্যমে টাঙ্গাইল পিবিআই জানায়, উপজেলার বীর সলীল এলাকার মৃত তোরাব আলী মিয়ার ছেলে ডিসিস্ট ফরিদ উদ্দিন (৪৫) গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় জমিতে পানি সেচ দেওয়ার জন্য নিজস্ব স্যালো মেশিন ঘরে যায়। পরের দিন ২৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরের দিকে ফরিদের চাচাতো ভাই মধু মিয়া ও প্রতিবেশী পান্নু মিয়া মেশিন ঘরের বাইরে তালা ঝুলতে দেখে। পরে মেশিন ঘরের বেড়ার কাটা অংশ দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখে ফরিদ ওই ঘরে থাকা চৌকির উপর পড়ে আছে। এসময় তাদের ডাক চিৎকারে কোন সাড়া না পেয়ে বাড়ির লোকজনকে খবর দেয়। পরে বাড়ির লোকজন এসে। মেশিন ঘরের তালা ভেঙ্গে হাত, পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় ফরিদের লাশ উদ্ধার করে। এ সময় ডিসিস্ট ফরিদ উদ্দিনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন দেখতে পায়। পরে ডিসিস্ট ফরিদের স্ত্রী বাদী হয়ে নাগরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে পিবিআই টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমীনের নির্দেশনায় পুলিশ পরিদর্শক (নি:) একেএম আলীনূর হোসেনের নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম ডিসিস্ট ফরিদ হত্যার রহস্য উদঘাটনের জন্য ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার এবং তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ফরিদ হত্যাকান্ডে জড়িত তিনজন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রেফতারকৃতরা জানায়, ফরিদ নিজেও ইয়াবা সেবন করতো এবং তাদের কাছে বিক্রি করতো। ঘটনার সময় গ্রেফতারকৃতদের কাছে টাকা না থাকায় ফরিদের কাছে বাকীতে ইয়াবা চায়। কিন্তু এর আগের বাকী টাকা পরিশোধ না করায় ফরিদ ইয়াবা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে ঝগড়া ও মারামারি হয়। এক পর্যায়ে আসামীরা ডিসিস্ট ফরিদের হাম, পা ও মুখ বেঁধে মেশিন ঘরে থাকা রেঞ্চ দিয়ে প্রথমে মাথায় আঘাত করে। পরে শ^াসরোধ করে হত্যা করে ফরিদের কাছে থাকা ইয়াবা নিয়ে পালিয়ে যায়।