বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতু পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি-জোট সরকারের সময়ে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা ঘরে ঘুমাতে পারেনি। আজ আপনারা এসিরুমে বসে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। এই দিনই দিন নয় আরো দিন আছে, অপেক্ষা করুন। সময় এলেই বুঝিয়ে দেওয়া হবে, আন্দোলন কত প্রকার কি কি। বাঁশের লাঠিতে পতাকা বেধে রাস্তায় নামলে খবর আছে। জাতীয় পতাকা বাঁশের লাঠিতে লাগাবে এটা আমরা হতে দিব না। আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ডাক দিলে দশলক্ষ লোকের সমাগম ঘটবে। আমরা যদি রাজপথে অবস্থান নেই তবে বিএনপি মাঠে দাড়ানোর সুযোগ পাবেনা। আওয়ামী লীগ পালিয়ে যাওয়ার দল নয়। পালিয়ে যাওয়ার দল বিএনপি। খেলা হবে, রাজপথে খেলা হবে। সোমবার (৭ নভেম্বর) বিকালে টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বিএনপিকে তের বছরে তের মিনিটিও আন্দোলন করতে দেখিনাই। খালেদা জিয়া আজকে মুক্ত। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য একটি মিছিলও করতে পারেননি। এখন সরকার পতনের আন্দোলন করবে। খালেদা জিয়াকে নিয়ে নাকি দশ ডিসেম্বর ঢাকার রাজপথে মিছিল করবে কমেডিয়ান স্টাইলে।তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনবে বিপ্লবের কাঁধে ভর করে।তারেক রহমান মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল এবং বলেছিল সে আর রাজনীতি করবেনা। বিএনপি জনগনের জন্য আন্দোলন করছেনা। আসলে হাওয়া ভবন ফিরে পেতে আজকে তারা আন্দোলন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের সঞ্চালনায় ওই সম্মেলনটির উদ্বোধন করেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড: আব্দুর রাজ্জাক এমপি। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতু পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, শাহজাহান খান এমপি, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ এমপি, শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি এমপি উপস্থিত ছিলেন।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড: আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো: সিদ্দিকুর রহমান, শ্রম ও জণশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, সদস্য ইকবাল হোসেন অপু এমপি, অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, আলহাজ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, ডা: মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন প্রমুখ।
এ সময় টাঙ্গাইলের সাংসদ আতাউর রহমান খান, হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী, তানভীর হাসান ছোট মনির, ছানোয়ার হোসেন, আহসানুল হক টিটু, খান আহমেদ শুভসহ আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সম্মেলনকে ঘিরে বিরাট মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরি করা হয়। ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে ছিল সম্মেলনস্থল। সম্মেলনকে সফল সকাল থেকে জেলার ১২টি উপজেলা ইউনিটের নেতাকর্মীরা ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা মধ্য দিয়ে মিছিল নিয়ে সম্মেলনস্থলে এসে উপস্থিত হন।
সম্মেলন কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলে সাজ সাজ রব বিরাজ করছিল। সম্মেলনস্থল টাঙ্গাইল স্টেডিয়াম থেকে শুরু করে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের গোড়াই পর্যন্ত ব্যানার, ফেস্টুন ও বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন নেতার নামে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। কানায় কানায় ভরে যায় টাঙ্গাইল স্টেডিয়াম। পরিনিত হয় জন সমৃদ্রে। দুপুর ২টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে হেলিকপ্টার যোগে টাঙ্গাইল আসেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন শেষে দলের প্রেসডিয়াম সদস্য ড: মো: আব্দুর রাজ্জাক তিন বছরের জন্য নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। এতে একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুককে সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলাম (ভিপি জোয়াহের) কে সাধারণ সম্পাদক করে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়েছে।