কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা ঈগল পরিবহণের বাসে ডাকাতি ও পালাক্রমে ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার হওয়া ১০ আসামির মধ্যে আরও ৪ জন আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) বিকালে তারা টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেন। বাকি ছয়জনকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ওই ১০ জনকে গত রোববার (৭ আগস্ট) রাতে র্যাব গ্রেফতার করে। পরে তাদের সোমবার (৮ আগস্ট) রাতে টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ নিয়ে ওই মামলার সাতজন আসামি আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন।
মঙ্গলবার জবানবন্দি দেওয়া চার আসামি হচ্ছেন, আসলাম তালুকদার (১৯), রাসেল তালুকদার (২৫), নাইম সরকার (১৯) ও আলাউদ্দিন (২৪)।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় বর্ণনা দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন,বাসের নারী যাত্রীকে রাজা মিয়া দুবার এবং রতন, আওয়াল, নুরুন্নবী ও মান্নান একবার করে ভোগ(ধর্ষণ) করেছেন।
টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানবীর আহম্মদ জানান, আদালত স্বেচ্ছায় জবানবন্দি শেষে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে মাহমুদুল হাসান ওরফে মুন্না ওরফে রতন (২২), আব্দুল মান্নান (২০), বাবু হোসেন ওরফে জুলহাস (২১), মো: সোহাগ (১৯), জীবন প্রামাণিক (২০) ও খন্দকার হাসমত আলী ওরফে দীপুকে (২৩) জেলা গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। আদালতের বিচারক ফারজানা হাসানাত প্রত্যেককে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রকাশ, গত ২ আগস্ট কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ হয়ে চট্টগ্রামগামী ঈগল পডরিবহণের একটি বাস সিরাজগঞ্জ পৌঁছলে যাত্রীবেশী ডাকারা গাড়িতে ওঠে। টাঙ্গাইল অতিক্রম করার পর তারা অস্ত্রের মুখে বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে যাত্রীদের টাকা-পয়সা, মুঠোফোন, গয়নাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়। এ সময় বাসের এক নারী যাত্রী পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার হন। পরে বাসটি টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া এলাকায় সড়কের পাশে খাদে পড়ে যায়। এ ঘটনায় ওই বাসের যাত্রী হেকমত আলী বাদী হয়ে ৩ আগস্ট মধুপুর থানায় ডাকাতি ও যৌন নিগ্রহের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
ওই ঘটনায় মূলপরিকল্পনাকারীসহ ডাকাত চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব। গত রোববার (৭ আগস্ট) রাতে ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ এলাকায় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এর আগে এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) ভোরে টাঙ্গাইল শহরের নতুন বাস টার্মিনাল এলাকার দেওলাস্থ ভাড়া বাসা থেকে রাজা মিয়াকে গ্রেফতার করে টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পরের দিন শুক্রবার (৫ আগস্ট) ভোরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও সোহাগপল্লী থেকে মো: আওয়াল ও নুরুন্নবী নামে আরও দুইজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বর্তমানে ওই তিনজন কারাগারে রয়েছেন।