টাঙ্গাইলে বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনার মুল হোতা রাজার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার বিকালে গ্রেফতারকৃত রাজা মিয়াকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সিনিয়র চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রট মধুপুর আমলী আদালতের বিচারক বাদল কুমার চন্দ্র। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, টাঙ্গাইলের কোর্ট পরির্দশক তানভীর।
এর আগে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রুমি খাতুন ভূক্তভোগী ওই নারীর ২২ ধারা জবানবন্দি গ্রহন করেন। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা বাসে ডাকাতদের দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার নারীর ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রাথমিক আলামত মিলেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
মেডিকেল বোর্ডের প্রধান শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেহেনা পারভীন বলেন, ভোক্তভোগী ওই নারীকে তিন সদস্যের মেডিকেল টিম পরীক্ষা করেছে। কিছু সাইন পজিটিভ আছে। সাইন অব স্ট্রাগল রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তাঁর সোয়াব সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) ভোরে টাঙ্গাইল শহরের নতুন বাস্ট্যান্ড এলাকা থেকে রাজা মিয়াকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত রাজা মিয়া কালিহাতী উপজেলার বল্লা গোরস্থান পাড়ার হারুন অর রশিদের ছেলে। সে টাঙ্গাইল শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাসা ভাড়া থাকতো ও টাঙ্গাইল থেকে ঢাকা সড়কে ঝটিকা বাসের চালক ছিলো।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, ঈগল পরিবহনের যে বাসটি ডাকাতের কবলে পড়ে, সেই বাসের চালককে সরিয়ে দিয়ে রাজা চালকের সিট দখল করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনায় কে কে জড়িত ছিলো পুলিশকে জানিয়েছে রাজা।
তিনি আরও জানান, মধুপুরে বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান শুরু করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়া থেকে ঈগল পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ২৪ থেকে ২৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। গভীর রাতে সিরাজগঞ্জ পৌঁছালে সেখান থেকে একদল ডাকাত যাত্রীবেসে ওই বাসে ওঠে। বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর যাত্রীবেশে থাকা ওই তরুণ দল অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের বেঁধে ফেলে। কয়েক মিনিটের মধ্যে যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল, নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নেয়।এরপর এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে তারা। বাসটি বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে তিন ঘণ্টার মতো নিয়ন্ত্রণে রাখে। পরে পথ পরিবর্তন করে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ সড়কের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বালির স্তূপে বাসটি উল্টিয়ে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় বাসের এক যাত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে টাঙ্গাইলের মধুপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।