টাঙ্গাইল

ভন্ড প্রেমিক শরিফের প্রেমের ফাঁদে শিল্পীর জীবন নিঃস্ব

ভন্ড প্রেমিক শরিফের প্রেমের ফাঁদে শিল্পীর জীবন নিঃস্ব।

এমন ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ১নং মগড়া ইউনিয়নের কুইজবাড়ী গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে শিল্পীর সঙ্গে।

ভুক্তভোগী জানায়, ২০১২ সালে পারিবারিক ভাবে, প্রবাসী মো: নয়ন মিয়ার সঙ্গে শিল্পীর বিয়ে হয়। শিল্পী সংসার জীবনে অনেক সুখী ছিল। স্বামী নয়নের অনেক স্বপ্ন ছিল, শিল্পীকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে মানুষের মত মানুষ গড়ে তোলার। এজন্যই শিল্পীকে বাবার বাড়ি রেখে লেখাপড়ার সুযোগ দিয়ে, অল্প কিছুদিন পরেই নয়ন মিয়া বিদেশে চলেযায়। যাওয়ার পর থেকেই শিল্পীর বাবার বাড়ি থেকে কলেজে পড়ালেখা করে।

একই এলাকার, ছোট বাশালিয়া গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে শরীফ হাসান, শিল্পীকে আর ভালো থাকতে দিলনা। শরীফ হাসান দুরন্ত চালাক ব্যক্তি, শিল্পীকে আগে থেকেই নজরে রাখতো। শিল্পীর স্বামী বিদেশে অনেক টাকা কামাই করে, তাই এমন বিদেশীর বউয়ের সঙ্গে প্রেম করার জন্য উঠেপড়ে লাগে। শরীফ হাসান তার বন্ধুদের কে নিয়ে শিল্পীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলার জন্যে নতুন কৌশল অবলম্বন করে। শিল্পী যখন কলেজে যাবে তার আগেই রাস্তায় অপেক্ষা করতো শরীফ হাসান। হঠাৎ একদিন কলেজে যাওয়ার সময় রাস্তায় শিল্পীকে বলে প্লিজ আপনার স্বামীর মোবাইল নাম্বারটা দিবেন। প্রবাসী নয়ন ভাইয়ের সাথে কিছু কথা বলবো, শিল্পী তখন বিশ্বাস করে মোবাইল টা বের করে শরীফ হাসানকে দেয়। শরীফ হাসান তখন সুযোগ পেয়ে  শিল্পী ও নয়নের  নাম্বারটা নেয়। তারপর থেকে শুরু করে শিল্পীর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা।

অল্প কিছুদিনের মধ্যেই শিল্পি সঙ্গে ভাল একটা বন্ধুত্ব তৈরি হয় শরিফ হাসানের সঙ্গে। এরপর শিল্পী কাছ থেকে নগদ বেশ কিছু টাকা ধার নেয় শরীফ। ওই টাকা দিয়ে শরিফ হাসান টাঙ্গাইল সদরে বটতলা এলাকায় (মুন্নী বেগমের) বাসা ভাড়া করে।

অপরদিকে প্রবাসী মো: নয়ন কে, শরীফ হাসান ফোন করে দুজনের সম্পর্কের কথাটি জানিয়ে দিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রথমে ফাটল লাগায়। তারপর থেকেই  সংসারে ব্যাপক অশান্তি দেখা দেয় শিল্পী ও নয়নের মধ্যে। ঐ সময় ভন্ড প্রেমিক টাকা লুবি, প্রতারক, শরীফ হাসান সান্তনামূলক আশ্বাস দেয় শিল্পীকে বিয়ে করবে।

অবশেষে প্রেমিকের আশ্বাসকে বিশ্বাস করে সংসার করার জন্য গত ২৮/১১/২০১৯ সালে শরিফের উকিল বোনজামাতা বাবলু, মামা আলতাব হোসেন বাবুল মুন্সির, বন্ধু আল আমিন, শিল্পীর বান্ধবী রিমা, ও তার স্বামী মাসুদ, বাসার মালিক মুন্নি বেগম এদের  সহযোগিতায় আগের স্বামীকে ডিভোর্স দিতে।

গোপনে  দুজনেই রেজিস্টার বিহীন, ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক কালেমা পড়ে মৌখিক বিয়ে করে শরীফ হাসান, শিল্পীকে।

শরিফের ভাড়াটিয়া বাসায় সংসার জীবন শুরু হয়।

দুজনের এক-দেড় বছর সংসার করার পর প্রতারক স্বামী শিল্পীকে রেখে গালা ইউনিয়নের লতিফ মিয়ার মেয়েকে গত ২০/০৩/২০২১ তারিখে ১০ম শ্রেণী পড়ুয়া ছাত্রী সুমাইয়া কে বাল্যবিবাহ করে সংসার চলমান রেখেছে শরীফ হাসান।

এমন সংবাদ পেয়ে শিল্পী ছুটে যায়, শরিফ হাসানের গ্রামের বাড়িতে। তখন শিল্পীকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য শারীরিক নির্যাতন চালায় শরীফ হাসান। এ সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে শিল্পী, এলাকার লোকজন ছুটে এসে বিষয়টি প্রাথমিক মীমাংসার জন্য চেষ্টা করে গ্রামবাসী। কিন্তু শরীফ, গ্রামবাসী কথা মানতে নারাজ উত্তেজিত হয়ে তার বাহুমভক্ত ব্যক্তিদের কে ফোন করে ৮০,০০০ হাজার টাকার বিনিময়ে শিল্পীকে বাড়ি থেকে বের করতেই মরিয়া হয়ে ওঠে।

ভাড়াটিয়া ব্যক্তিরা হলেন, ফজল সাধু, আক্কাস আলী, নাজমুল সাকিব, মুসা, মনির, আরিফ, রুবেল, মাজিদুর সহ আরো অনেকেই। ভারাটিয়া বাহিনীর ক্ষমতার দাপটে শিল্পীকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। যাওয়ার সময় শরীফ হাসান হুমকি দিয়ে বলে পুলিশ প্রশাসনের আশ্রয় নিলে। তাহলে তকে প্রাণে মেরে ফেলবো বলে হুমকি প্রদান করে।

ন্যায় বিচারের আশায় ভুক্তভোগী পরিবারটি ছুটে যায়, মগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলামের নিকট সেখানে গিয়ে শিল্পী ঘটনার সকল প্রকার বিষয়াদি বলে।

চেয়ারম্যান সাহেব ন্যায় বিচারের নামে বারবার ঘোরাতে থাকে শিল্পীকে বিবাদীপক্ষ অনেক দাঙ্গাবাজ হামলাকারী হিসেবে পরিচিত তাই চেয়ারম্যান সাহেব বিচার না করে দিনের পর দিন সান্তনা দিতে থাকে শিল্পীকে।

অবশেষে শিল্পী আক্তার বাদী হয়ে। শরিফ হাসানকে বিবাদী করে টাঙ্গাইল সিআইডিতে মামলা দায়ের করেন।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker