আজ মাদারীপুর মুক্ত দিবস
১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে বিজয় এনেছিল মুক্তিযোদ্ধারা; সমাদ্দার ব্রিজের কাছে তুমুল যুদ্ধ
১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীকে যুদ্ধের মাধ্যমে পরাজিত করে মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় এনে মাদারীপুর শক্র মুক্ত করেছিলেন। তাই ১০ ডিসেম্বর মাদারীপুর মুক্ত দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিক থেকেই মাদারীপুরের মুক্তিযোদ্ধারা এক পর এক আক্রমণের ফলে এক সময়ে পাক হানাদার বাহিনী তারা পালবার পরিকল্পনা করে। এদিকে তাদের এই পালাবার পরিকল্পনা খবর কলাগাছিয়ায় অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে খলিল বাহিনীর কাছে গোয়েন্দা মারফত খবরটি আগেই পৌঁছে গিয়েছিল। ৮ ডিসেম্বরে কমান্ডার খলিল খানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধার সারারাত ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের সমাদ্দার ব্রিজের চতুর্দিকে অবস্থান করেন। সেই ব্রিজটিকে আগেই আলমগীর হোসেনের জেড ফোর্সের মুক্তিযোদ্ধার উড়িয়ে দিয়েছিল।
এই কারণে শক্রবাহিনী গাড়ি থেকে নেমে পায় হেঁটে ব্রিজ এলাকা পার হচ্ছিলো ঠিক তখনেই মুক্তিযোদ্ধার চতুর্মুখী আক্রমণ করলে শুরু হলে যায় তুমুল যুদ্ধ। এই যুদ্ধটি একটানা ৩ দিন ২রাত পর্যন্ত চলেছিল। যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়ে ছিল ভারি মেশিনগান, মর্টার, এসএমজি, এলএমজি, এসএলআর, রাইফেল আর গ্রেনেডের গর্জনে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছিল জনপদটি। এসময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের খাবারের ব্যবস্থা করেছিল স্থানীয়রা।
১০ ডিসেম্বরে এ যুদ্ধে শিবচর, কালকিনিসহ আশেপাশের মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণ করলে যুদ্ধ আরো তীব্রতর হয়েছিল। যুদ্ধের এক সময়ে শক্রবাহিনীর বুলেট আঘাতে শহিদ হন কিশোর মুক্তিযোদ্ধা সরোয়ার হোসেন বাচ্চু এবং গুরুতর আহত হয়েছেন আখতারুজ্জামান। এদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের সাঁড়াশি আক্রমণে ৪০ জন পাক সেনা নিহত হয়।
সেইদিন সন্ধ্যায় মেজর ঘটকের নেতৃত্বে ৭০ জন পাকসেনা ও ক্যাপ্টেন সাঈদ কমান্ডার খলিলুর রহমান খানের কাজে তাদের অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করলে মারীপুর হয়েছে শক্রমুক্ত।