মাদারীপুর

শিক্ষক দম্পতি ভারতে বসবাস করে বাংলাদেশে বেতন উত্তোলন: মাদারীপুরে চাঞ্চল্য

মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার শশিকর শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ এবং তাঁর প্রভাষক স্ত্রী চম্পা রানি মন্ডলের বিরুদ্ধে বছরের অধিকাংশ সময় ভারতে বসবাস করেও বাংলাদেশ থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, এই শিক্ষক দম্পতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাড়ি কিনে সেখানেই দীর্ঘ সময় ধরে থাকছেন।

মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার শশিকর শহিদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ও তার প্রভাষক স্ত্রীর বিরুদ্ধে বছরের অধিকাংশ সময় ভারতে বসবাস করেও বাংলাদেশে কলেজ থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে তারা হলেন অধ্যক্ষ **দুর্লভানন্দ বাড়ৈ** ও তাঁর স্ত্রী সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক **চম্পা রানি মন্ডল**।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই শিক্ষক দম্পতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণীতে একটি বাড়ি কিনেছেন এবং সেখানেই দীর্ঘ সময় বসবাস করে আসছেন। নবগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দা **প্রেমান্দ সরকার** বলেন, “দুর্লভানন্দ বাড়ৈ চাকুরি নিয়েছেন অনিয়ম করে। তিনি ভারতের কল্যাণীতে বাড়ি করেছেন। সেখানেই তার স্ত্রী সন্তানরা রয়েছে। অথচ বেতন তুলছেন বাংলাদেশে। নাম মাত্র মেডিকেল ছুটি নিয়েছেন। বেসরকারি কলেজে এক মাসের বেশি ছুটি হয় না। অথচ তিনি ছুটি নিয়েছেন ৬ মাসের।”

তারা আরও দাবি করেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে অধ্যক্ষ ও তাঁর স্ত্রী ভারত চলে যান। কিছুদিন পর অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ দেশে ফিরলেও তাঁর স্ত্রী এখনো ভারতেই রয়ে গেছেন। যাওয়ার আগে চম্পা মন্ডল চেকে স্বাক্ষর করে রেখে গেলে, যার মাধ্যমে পরবর্তীতে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করা হয়।

যদিও অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী বর্তমানে মেডিকেল ছুটিতে সেখানেই (ভারতে) রয়েছেন। দুই দফায় তিনি ৬ মাস ছুটি নিয়েছেন এবং সবকিছুই নিয়ম অনুযায়ী চলছে বলে জানান তিনি।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য ও প্রশাসনিক দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় গত **১৮ মার্চ** মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে উভয়ের এমপিও বাতিল করা হয়েছে। আদেশটিতে স্বাক্ষর করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী সচিব **দীপায়ন দাস শুভ**। অধ্যক্ষ দুর্লভানন্দ বাড়ৈ ভারতে থাকাকালীন অবস্থায় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন **বিমল পান্ডে**।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের শিক্ষকরা জানান, এই দম্পতি কলেজ গভর্নিং বডি ও প্রশাসনিক মহলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের সহযোগিতা করছেন অফিস সহায়ক **সজল সরকার**।

ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা **সাইফ-উল আরেফীন** বলেন, “অভিযোগগুলো তদন্ত করে আইন অনুযায়ী প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker