মাদারীপুরে রাজৈরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকঘণ্টা ব্যাপী চলে সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এসময়ে দুই ওসিসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (১২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজৈর উপজেলার বেপারিপাড়া মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে ঘণ্টাব্যাপী প্রচেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আহতেরা হলেন রাজৈর উপজেলার পশ্চিম রাজৈর গ্রামের লাভলুর ছেলে সালাউদ্দিন (১৮), হয়দার আকনের ছেলে সাগর আকন (২৩), মাহবুব মোল্লার ছেলে ওমর মোল্লা (২২), হুমায়ুন খানের ছেলে ইমন খান (২০), হাবি শেখের ছেলে সাব্বির শেখ (১৮), রাজৈর থানার পুলিশ সদস্য জুয়েনসহ ৯ জন। এরা রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান, তদন্ত ওসি সঞ্জয় কুমার ঘোষ ও এসআই তারেকসহ অন্তত ১২ জন জন পুলিশ সদস্য ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদ পরবর্তী সময় গত ২ এপ্রিল রাজৈর উপজেলার পশ্চিম রাজৈর ফুচকা ব্রিজ এলাকায় বাজি ফাটায় বদরপাশা গ্রামের আতিয়ার আকনের ছেলে জুনায়েদ আকনসহ বন্ধুরা। এসময় ওই গ্রামের মোয়াজ্জেম খানের ছেলে জোবায়ের খান ও তার বন্ধুরা মিলে তাদের বাধা দিতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জেরে গত ৩ এপ্রিল সকালে রাজৈর বেপারিপাড়া মোড়ে জোবায়েরকে একা পেয়ে পিটিয়ে তার ডান পা ভেঙে দেয় জুনায়েদ ও তার লোকজন।
পরে আহত জোবায়েরের বড় ভাই অনিক খান (৩১) বাদি হয়ে জুনায়েতকে প্রধানসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে আসামি করে রাজৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনা নিয়ে উভয় গ্রামের লোকজন ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। একপর্যায়ে শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতে দুই গ্রাম লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরেন।
এ সংঘর্ষ কয়েকঘণ্টা ব্যাপী চলে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে রাজৈর থানার পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে ঘণ্টাব্যাপী প্রচেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এতে দুই ওসি ও অন্তত ১২ পুলিশ কর্মকর্তা-সদস্যসহ ২৫ জন আহত হয়েছে।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আমি ও তদন্ত ওসি সহ কমপক্ষে ১০/১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এছাড়া উভয় গ্রামের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।