মাদারীপুর সদর উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার এর বিচারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠছে শহর। শ্রমিকদলের সভাপতি শাকিল মুন্সিকে (৩৮) হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে তার মরদেহ নিয়ে দুই দফায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এদিকে নিহতের ঘটনার পর থেকে এলাকায় এখন চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি মাদারীপুরে পৌর শ্রমিকদলের কমিটি গঠন করা হলে সেই কমিটিতে মাদারীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান আক্তার হাওলাদারের ছোট ভাই যুবলীগ নেতা লিটন হাওলাদারকে মাদারীপুর পৌর শ্রমিকদলের সভাপতি করা হয়।
লিটন হাওলাদার যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত সেই সাথে চাঁদাবাজি, লুটপাট, হত্যা, সংঘর্ষসহ একাধিক মামলার আসামি হওয়ায় এই কমিটির বিরোধিতা করছিলেন শাকিল মুন্সি।
এই ঘটনার জের ধরেই রবিবার (২৩ মার্চ) রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলা শ্রমিকদলের একাংশের সভাপতি শাকিল মুন্সিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে লিটন হাওলাদারের লোকজন। নিহত শাকিল মুন্সি মাদারীপুর সদর উপজেলার নতুন মাদারীপুর এলাকার মোফাজ্জল মুন্সির ছেলে।
নিহতের স্বজনরা জানান, রবিবার রাতে লিটন হাওলাদার, আল-আমিন হাওলাদার, জাহাঙ্গির হাওলাদার, ওমর হাওলাদার, হাকিম বেপারীসহ বেশ কয়েকজন হামলা করে শাকিলকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। সেখানেই চিকিৎসারত অবস্থায় শাকিল মারা যায়।
এদিকে মারা যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিএনপির সমর্থকরা হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এসময়ে হামলাকারীদের ৪টি ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। এদিকে সোমবার (২৪ মার্চ) বিকালে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে শাকিলের মরদেহ ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। পরে শাকিলের মরদেহ নিয়ে হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে দ্বিতীয় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে জেলা বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় এখন চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। মাদারীপুর জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব কামরুল হাসান বলেন, মাদারীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান আক্তার হাওলাদার। তার এক ভাই ওরম জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। অপর ভাই লিটন যুবলীগ নেতা। তারাই শাকিলকে হত্যা করেছে। আমরা এর বিচার চাই।
জেলা শ্রমিকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হেমায়েত হোসেন বলেন, শাকিলকে আওয়ামী লীগের দোসররা খুন করেছে। এই হত্যার সাথে লিটন হাওলাদার, আনোয়ার হাওলাদার, আলাউদ্দিন, আকমল হোসেন খান জড়িত।
নিহত শাকিলের ভাই মাদারীপুর পৌর বিএনপির ২নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক হাসান মুন্সি বলেন, আমার ভাই শাকিলকে প্রতিপক্ষ লিটন, আল আমিন, জাহাঙ্গীরসহ বেশ কয়েকজন কুপিয়ে হত্যা করেছে। এরা সবাই আওয়ামী লীগের লোকজন। আমি এই হত্যার বিচার চাই।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান বলেন, শাকিল মুন্সি নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দোষীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।