মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য,,একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না?
হাদিসে কুদসিতে বলা হয়েছে, ‘কিয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, হে আদম সন্তান! আমি অসুস্থ হয়েছিলাম, কিন্তু তুমি আমাকে দেখতে যাওনি। বান্দা বলবে, আপনি তো বিশ্বজাহানের প্রতিপালক- আমি আপনাকে কিভাবে দেখতে যেতে পারি? আল্লাহ বলবেন, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ হয়েছিল। তুমি তাকে দেখতে গেলে সেখানে আমাকে পেতে…। -সহিহ মুসলিম: ২১৬২
ভিটেমাটি হীন হত দরিদ্র পরিবারের কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের সিদলা ইউনিয়নের ভিন্না গ্রামের ১২ বছরের ছেলে মোহাম্মদ শিপন তার বাবার নাম ওয়াকিল মিয়া একজন দিনমজুর, দিন আনে দিন খায়। ওয়াকিলের পিতার নাম মৃত শহিদ মিয়া।
শিপন অন্ডকোষের কঠিন সমস্যায় ভুগছেন,ময়মনসিংহের স্বদেশ হাসপাতালের এমবিবিএস ডাক্তার মোহাম্মদ আফজালুর রহমানের পরিক্ষা-নিরিক্ষার ফলস্রতিতে শিপনের ভয়ংকর রোগ ধরা পড়ে। অন্ডকোষের অপারেশন প্রয়োজন দ্রুত। যাতে খরচ হবে সত্তর হাজার টাকা। এমনটি জানা যায় ডাক্তারী সূত্র মতে।
সম্পুর্ন রুপে ভেঙ্গে পড়ে শিপনের বাবা মা। যার সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় তার ছেলের অপারেশন কি করে করাবে কান্না যেন শিপনের পরিবার ও স্বজনদের শুভাকাঙ্খী হয়ে পড়েছেন।
গত ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ সে আবার মানবিক কান্ডারী যুব শক্তি ক্লাবের সহায়তায় কিশোরগঞ্জের ডিজিল্যাবে পরিক্ষা নিরিক্ষা করায়, প্রফেঃডাক্তার মোল্লা নজরুল ইসলামের কাছে, একই সমস্যা ধরা পড়ে।
সূত্র মতে জানা যায়, ছেলেদের দেহের নিচের দিকে একটি ঝুলন্ত থলি আছে , যাকে অন্ডকোষের থলি বলে। এ থলির ভিতরে দুটো গোলাকার অন্ডকোষ বা টেস্টিস থাকে। একটি ছেলে যখন বড় হয় অর্থাৎ বয়সন্ধিকালে পৌঁছায় তখন এখান থেকেই শুক্রানু তৈরি হয়। অন্ডকোষে শুক্রাণু তৈরি হবার পর শুক্রবাহী নালী দিয়ে বের হয়ে বীর্যের সাথে মিলিত হয়।
জানা যায়, শিপনের পিতা ওয়াকিল বড় হয়েছে মামার বাড়িতে, উপজেলার সাহেবের চর গ্রামে থাকেন জীর্ণ শীর্ণ একটা সনের কোঠিরে বছরের অধিকাংশ সময় কাটায় শিপনের পিতা ওয়াকিল রিজিকের তাগিদে বিভিন্ন জেলায়।
শিপন গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তার রঙ্গিলার পশ্চিম পাশে নেয়ামত আলী কওমি মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেন, অন্যের সহযোগিতায় শিপন পড়াশুনার খরচ মিটায়, খবর নিয়ে জানা যায় শিপন ১১ পারা পবিত্র আসমানী কিতাব কোরআন শরিফ মোখস্ত করেছেন। অত্যন্ত ভদ্র ও লাজুক প্রকৃতির ছেলে শিপন। তার আকুতি তিনি বাঁচতে চায় এবং পুরোপুরি কোরআনের হাফেজ হতে চায়।
অসহায় পরিবারের পক্ষে খরচ বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সকলের সাহায্য কামনা করেছে তার পরিবার। সাহায্য ব্যতীত তার চিকিৎসা করানো সম্ভবপর না।
তার পরিবার সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছে, সামর্থ্যানুযায়ী তার পাশে এসে দাঁড়ানোর। সবার সহযোগীতায় বাঁচাতে পারে তার এই অমূল্য সম্পদ। চালিয়ে যেতে পারে তার স্বাভাবিক জীবন।
শিপনের বাবা ওয়াকিল জানান,আমি গরিব মানুষ অভাবের সংসার আমার একটা মাত্র ছেলে তার এতো বড় অসুখ, আমি ভাবতাম পারতাচিনা কি করাম, মানবিক কান্ডারী যুবশক্তি ক্লাবের সহযোগিতায় বিভিন্ন মানবিক মাইনষের কাছে দৌড়ায়তাছি। এসব কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
মানবিক কান্ডারী যুব শক্তি ক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক মাহফুজ রাজা জানান, মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একজন আরেক জনের বিপদে এগিয়ে আসবে এটায় স্বাভাবিক। মানুষ হিসেবে আমাদের কর্তব্য এই অসহায় পরিবারটির পাশে থাকা। মানবিক কান্ডারী যুবশক্তি ক্লাবের নিজস্ব কোন তহবিল নেই, কিছু টাকা আমরা ক্লাবের সদস্যবৃন্দরা যে যা পারে তা দিয়ে জমা করেছি, যা এ অপারেশনের জন্য অতি সামান্য, ক্লাবের সদস্যবৃন্দ ও এলাকার কোমলমনীয় মানুষজন বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করতেছি।
কিছুতেই চিকিৎসার পুরো টাকা ম্যানেজ করতে পারছিনা। এমতাবস্থায়, সমাজের বিত্তবানদের অনুরোধ করবো, আপনারা অসহায় ছেলেটির পাশে দাঁড়ান।’
জানা যায়, দান–খয়রাত প্রকাশ্যেও করা যায়, গোপনেও করা যায়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যদি তোমরা দান প্রকাশ্যে করো, তবে তা উত্তম; আর যদি তা গোপনে করো এবং অভাবীদের দাও, তবে তা তোমাদের জন্য শ্রেয়। এর মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের মন্দগুলো মোচন করে দেবেন। তোমরা যা করো, আল্লাহ তা অবগত আছেন।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত-২৭১)
প্রভাসী সবুজ আহমেদ বলেন, যারা প্রভাসে থাকেন সকলে এগিয়ে আসুন, আমাদের সামান্যতম সহযোগিতায় বেঁচে যাবে পবিত্র কোরআনের একজন সৈনিক।
২নং সিদলার ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত মেম্বার কামরুজ্জামান কাঞ্চন বলেন, দশের লাঠি একের বুঝা, আমরা দশজনে মিলে যদি ছেলেটির পাশে দাঁড়াই সহজেই কঠিন এই মুহূর্তটা কাটিয়ে উঠতে পারে শিপনের পরিবার।