কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলার ১০ নং জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, ভোট ছিনতাইয়ের পর আনারস প্রতীক ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। বাকি ৮ টি ইউনিয়নে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট গ্রহন হয়।
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে জালালপুর ইউনিয়নের ৬৮নং উত্তর চরপুক্ষিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬ ও ৭ নং বুথে ভোট ছিনতাইয়ের এ ঘটনা ঘটে।
কেন্দ্র সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রোববার সকাল ৮টা থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলে । এসময় নারী ওপুরুষ ভোটাদের উপন্থিতি ছিল লক্ষণীয়। সকাল সাড়ে আটটার দিকে নৌকার সমর্থকরা আচমকা প্রবেশ করে ৬ ও ৭ নং কক্ষটি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে সবকটি ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেয় এবং প্রকাশ্যে সিল মারতে থাকে। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্রপ্রার্থী হাবিবুর রহমান রুস্তম কেন্দ্রটি দেখতে আসলে তাকে বেধরক মারপিঠ করা হয়। মারপিঠের ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে তার সমর্থকরা কেন্দ্রটি ঘিরে ফেলে ক্ষোভে ভোট কক্ষে থাকা ব্যালট বাক্স, বাশের বেষ্টনি ভাংচুর করে। কেন্দ্র দখলে রাখা নৌকার সমর্থকদের ধাওয়া করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ও বিজিপি সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এ ঘটনার পর ভোটারদের মনে ভীতি সৃষ্টি হলে কেন্দ্র ফাকা হয়ে যায়। প্রায় ২ ঘন্টার পর পুনরায় ভোট গ্রহন শুরু হলে ফের উভয় পক্ষে মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির হলে কেন্দ্রটিতে ভোটগ্রহন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
৬৮ নং কেন্দ্রের উত্তর চরপুক্ষিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার মো: মাসুদুল হক ব্যালট পেপার ছিনতায়ের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, নৌকার সমর্থকরা জোরপূর্বক প্রবেশ করে। তাদের বাধা দিলে প্রাননাশের হুমকি ধমকি দিয়ে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেয় এবং জালভোট প্রদান করেন। এ সময় আমরা সবাই অসহায় অবস্থায় ছিলাম।
আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্রপ্রার্থী হাবিবুর রহমান রুস্তম বলেন, নৌকার সমর্থকরা কেন্দ্র দখল করে এবং ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে জালভোট প্রদান করে। আমি দেখতে গেলে অতর্কিতভাবে আমার ও সমর্থকদের উপর হামলা করে। এত আমি সহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। ভোটের সুন্দর পরিবেশকে নৌকারপ্রার্থী ও তার সমর্থকরা বিনষ্ঠ করে দেয়।
এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে নৌকারপ্রার্থী আ: খালেক সরকার রাজু বলেন, কেন্দ্রটিতে আমি বেশিভোট পাব এটি স্বতন্ত্রপ্রার্থী হাবিবুর রহমান রুস্তম তার সমর্থকরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তাদের সমর্থকদের হামলায় আমারও বেশ কয়েকজন সমর্থক আহত হয়েছে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার ভূমি উম্মে হাফসা নাদিয়া বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালায় পুলিশ। ভোটের পরিবেশ অনুকূলে না থাকার ওই কেন্দ্রটিতে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।