গ্রীষ্ম, বর্ষা,শীত বা প্রকাণ্ড দাবদাহ অথবা কনকনে হার কাঁপানো ঠান্ডা,থাকুক যতই বৈরী আবহাওয়া। পৃথিবীর সকল কাজ থেমে থাকতে পারে শুধু থামবে না, পেটের ক্ষুধা। পেটের ক্ষুধা নিবারণ করতে পৃথিবীময় মানুষ কতইনা কাজ করে থাকে। “যারা দলান কোডাত থাহে, দামি গাড়ী দিয়া চলে, হেরা কিতা আর বুঝবো পেডের খিদা কি জিনিস”
“কুড়িঁঘাট মোড়”
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের পৌর এলাকার একটি স্থান, এখানেই কাক ডাকা ভোরে আলাপকালে এমন বাক্যে মনের কষ্ট প্রকাশ করলেন একজন ৫০শোর্ধ্ব বৃদ্ধ।
তিনি দাঁড়িয়ে আছেন ক্ষেত মালিকের অপেক্ষায়, কাজে যাবেন(দিনমজুরী) উনার সাথে কথা বলতে বলতে নজরে আসে প্রায় শতাধিক লোকের আগমন ঘঠেছে। অনেকের হাতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, দেশীয় কাজের যন্ত্রপাতি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ বৃদ্ধা জানান, “প্রতিদিন সকালে এখানে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে বিভিন্ন বয়সের দৈনিক শ্রমিক এসে জড়ো হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে গৃহস্থ এসে দরদাম ঠিক করে পছন্দ মত কাজের লোক নিয়ে যায়। সংসারে অনাটন কাজ না করেও উপায় নাই, কিন্তু বৃদ্ধ বলে কেউ কাজে নেয়না তাই সবার আগেই এসে হাজির এই বৃদ্ধ।”
জানা যায়, বহু বছর পূর্বে থেকেই কুড়িঁঘাট মোড়ে কামলার হাট(মুনির হাট) বসে। গৃহস্থরা যাবতীয় কৃষি বা খামারী কাজের জন্য সহজেই কাজের মানুষ পেয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন ভোরে এখানে দুই শতাধিক কাজের মানুষের উপস্থিতি হলেও সবার ভাগ্যে জুটেনা কাজ।
মানিক মিয়া একজন শ্রমজীবী মানুষ দ্বীর্ঘশ্বাষ ছেড়ে বলেন, “তিনডা ছেরি একটা বেয়া দিচি, দুইডা বেয়ার যুগ্য, একটা ছেরা আছে দুই বচ্চরের, কাম পাইলে বেহেরে লয়া খায়, কাম না পাইলে ওবাস তাহি পুলাপান লয়া, লেহাপড়া করাইতারিনা টেহার অবাবে।”
তিনি আরো জানান, তার বসতঘরটাও জীর্ণশীর্ন অনেকাংশে কাপড় দিয়া ঢাকা, এ পর্যন্ত কোন মেম্বার চেয়ারম্যানের কাছ থেকে কিছুই পাননি।