হোসেনপুরে চাচা-ভাতিজার বৃক্ষরোপণে গ্রামীণ প্রকৃতিতে নতুন মাত্রা
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার শাহেদল ইউনিয়নের বীর পাইকশা গ্রামে নজরুল ইসলাম ও তার ভাতিজা তানভীর আহমেদ ব্যক্তিগত উদ্যোগে শত শত বৃক্ষরোপণ করে সবুজের বিপ্লব ঘটিয়েছেন। তাদের এই প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রামীণ প্রকৃতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং এলাকার মানুষকে বৃক্ষরোপণে উৎসাহিত করছে।
সবুজ গাছ, তুমি প্রকৃতির অলংকার, ছড়িয়ে দাও প্রাণে শান্তি, স্নিগ্ধতার উপহার।
বীর পাইকশা গ্রামের সারি সারি বৃক্ষের সবুজায়ন দেখলে মনে পড়ে যায় কবিতার এ পঙক্তিটি। সবুজ গালিচায় মোড়ানো গ্রাম, চারদিকে রয়েছে বিস্তীর্ণ মাঠ, আঁকাবাঁকা মেঠোপথ, পথের দু’ধারে যতদূর চোখ যায় শুধু বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছ। প্রকৃতি যেন এখানে দাঁড়িয়ে আছে নিজের অভয়াশ্রম খুলে। **নজরুল ইসলাম** ও **তানভীর আহমেদের** প্রতিনিয়ত শত শত বৃক্ষরোপণ প্রকৃতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সম্পর্কে তারা চাচা-ভাতিজা।
বৃক্ষরোপণ পরিবেশ ও মানব জীবনের জন্য অপরিহার্য। বৃক্ষ আমাদের অক্সিজেন সরবরাহ করে, কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, বৃষ্টিপাত ঘটায় এবং মাটির ক্ষয়রোধ করে। এছাড়াও, বৃক্ষ আমাদের খাদ্য, ঔষধ, বস্ত্র, জ্বালানি ও বাসস্থান সরবরাহ করে। তাই, পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং সুস্থ জীবন ধারণের জন্য বৃক্ষরোপণ করা অত্যন্ত জরুরি। এমনই সংকল্প মনে ধারণ করে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার শাহেদল ইউনিয়নের বীর পাইকশা গ্রামে বৃক্ষপ্রেমী চাচা **নজরুল ইসলাম** ও ভাতিজা **তানভীর** বৃক্ষরোপণ করে এলাকায় সবুজের বিপ্লব ঘটিয়েছেন। তাদের বাগানের পাশাপাশি বাড়ির আঙিনা, পুকুর পাড় ও মৎস্য খামারের চারপাশে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছ লাগানো। আর এসব গাছ দেখতে প্রতিদিন ভিড় করেন এলাকাবাসী ও বৃক্ষপ্রেমীরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নজরুল ইসলাম ও তানভীর দুজনে মিলে বাড়ির আঙিনায় মাল্টা, লিচু, আম, নারিকেল সহ বিভিন্ন রকমের ফলজ গাছের চারা রোপণ করছেন।
বৃক্ষপ্রেমী **নজরুল ইসলাম** বলেন, “অনেক দিন আগে থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল বাড়ির আঙিনা সহ পতিত সকল জায়গায় গাছ লাগানোর। পরে স্বপ্নগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতেই ভাতিজা তানভীরকে নিয়ে দুজনে গাছের চারা লাগানো শুরু করি। প্রথমে চারশো সুপারি চারা রোপণ করি, আর এ থেকে বাড়ি এবং বাগানের পাশাপাশি পুকুর পাড়েও বৃক্ষরোপণ করছি।”
বৃক্ষপ্রেমী **তানভীর আহমেদ** বলেন, “আমরা সকলেই সুন্দর একটা জীবন চাই। আর সুন্দর জীবনের জন্য বৃক্ষরোপণ করা আমাদের সকলের প্রয়োজন।”
জানা যায়, বড়ভাই ও ভাতিজার বৃক্ষরোপণের এমন আগ্রহ দেখে মাঝে মাঝে প্রবাসী বৃক্ষপ্রেমী **খাইরুল** ও **কামরুল**, ভাই ও ভাতিজাকে উৎসাহ দেন। এছাড়াও পরামর্শের পাশাপাশি অনেক সময় অর্থের যোগান দেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, তাদের এই বৃক্ষরোপণ দেখে অনেকেই বৃক্ষরোপণের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন।
হোসেনপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ **একেএম শাহজাহান কবির** জানান, “চাচা-ভাতিজার এমন বৃক্ষপ্রেম প্রশংসনীয়। এমন উদ্যোগ ব্যক্তিগতভাবে কেউ নিলেও আমাদের কৃষি অফিস প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহায়তা নিয়ে সবসময় পাশে থাকে।”