ঘোড়ার শোক নিয়েই চলে গেলেন গোরখোদক মনু মিয়া
কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা, নিঃস্বার্থ গোরখোদক মো. মনু মিয়া ৬৭ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তিন হাজার ৫৭ জন মানুষের শেষ বিদায়ের সঙ্গী ছিলেন তিনি। শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টায় নিজ বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মনু মিয়ার মৃত্যুতে তার এলাকাসহ পরিচিতজনদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মনু মিয়া আর নেই। তিন হাজার ৫৭ জন মানুষের শেষ বিদায়ের নিঃস্বার্থ সঙ্গী ছিলেন, ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ **মো. মনু মিয়া** সাতষট্টি বছর বয়সে পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে।
শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টায় নিজ বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মনু মিয়ার মৃত্যুতে তার এলাকাসহ পরিচিতজনদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে, এতে যেন নিস্তব্ধতা ও মহা কষ্টে ভারি হয়েগেছে আকাশ-বাতাস।
জানা যায়, দূরের যাত্রায় দ্রুত পৌঁছাতে নিজের ধানি জমি বিক্রি করে বেশ কয়েক বছর আগে কিনেছিলেন একটি ঘোড়া। এই ঘোড়ার পিঠে তিনি তুলে নেন তার যাবতীয় হাতিয়ার-যন্ত্র। সেই ঘোড়ায় সওয়ার হয়েই শেষ ঠিকানা সাজাতে মনু মিয়া ছুটে চলতেন গ্রাম থেকে গ্রামে। তিনি অসুস্থতার কারণে ঢাকা একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, সেই সুযোগে তার প্রিয় ঘোড়াটি হত্যা করেন দুর্বৃত্তরা।
ঢাকার আইনজীবী এবং এলাকার সন্তান অ্যাডভোকেট **শেখ মোহাম্মদ রোকন রেজা** জানান, কিছুদিন আগে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মনু মিয়া। সেই সময় দুর্বৃত্তরা তার বহু বছরের সঙ্গী প্রিয় ঘোড়াটিকে হত্যা করে। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি।
রোকন রেজা বলেন, “আমি হাসপাতালে তাকে দেখতে গিয়ে বলেছিলাম- অনেকে আপনাকে নতুন ঘোড়া কিনে দিতে চায়। তখন তিনি বলেছিলেন, আমি এই কাজ করি শুধু আল্লাহকে খুশি করতে। মানুষের কাছ থেকে কিছু নিতে চাই না।”
জয়সিদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান **মো. বাহাউদ্দিন ঠাকুর** তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেন, “ঘোড়ার মৃত্যুর পর থেকেই মনু মিয়া শারীরিকভাবে আরও দুর্বল হয়ে পড়েন। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে এলেও আর আগের মতো হয়ে ওঠেননি। তার মৃত্যুতে আমরা একজন দয়ার সাগর, নিঃস্বার্থ মানুষকে হারালাম।”