কেরানীগঞ্জে মাদরাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ; দেয়াল উড়ে আহত ৪, মিলল বোমা তৈরির সরঞ্জাম
ছুটির দিন হওয়ায় রক্ষা পেল শিক্ষার্থীরা; ঘটনাস্থলে কাজ করছে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় ‘উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসা’ ভবনে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। শক্তিশালী এই বিস্ফোরণে মাদরাসার একতলা ভবনের বেশ কয়েকটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থল থেকে ককটেল, কেমিক্যাল ও বোমা তৈরির বিপুল সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ঘটা এই ঘটনায় মাদরাসার পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তার স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাদের দুই শিশু সন্তান উমায়েত (১০) ও আব্দুল্লাহ (৭) গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদরাসায় কোনো শিক্ষার্থী ছিল না, ফলে বড় ধরনের প্রাণহানি থেকে রক্ষা পেয়েছে প্রায় ৫০ জন ছাত্র।
তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য ও উদ্ধারকৃত আলামত:
বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে পাশের ভবনের জানালা ও আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলামত সংগ্রহ করেছে। বাড়ির মালিক পারভীন বেগম জানান, মুফতি হারুন নামের এক ব্যক্তি মাদরাসাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। তবে মাদরাসার আড়ালে সেখানে বিস্ফোরক তৈরি বা নাশকতামূলক কার্যক্রম চলছিল কি না, তা নিয়ে খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দা জাকির হোসেন জানান, তিনি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বিস্ফোরণ ঘটে এবং ওপর থেকে ইট পড়ে তার মাথায় লেগে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পাশের ভবনের বাসিন্দারাও এই ঘটনায় চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধারকৃত কেমিক্যাল ও ককটেলগুলো উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন হতে পারে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, “ঘটনাস্থল থেকে দাহ্য পদার্থ ও ককটেল তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। এই বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ এবং এর পেছনে কোনো নাশকতার পরিকল্পনা ছিল কি না, তা উদ্ঘাটনে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”