চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের চন্দনাইশের কাঞ্চন পেয়ারা এখন বাজারে

বাজারে আসতে শুরু করেছে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী লালসালুর চাদরে মোড়ানো চন্দনাইশ-পটিয়ার পেয়ারা! বেশি মিষ্টি ও বীজ তুলনামূলক কম হওয়ায় এই পেয়ারার কদর রয়েছে দেশ ও বিদেশে! পটিয়ার হাইদগাঁও, কচুয়াই, খরনা, চন্দনাইশের কাঞ্চন নগর ও দোহাজারীর পাহাড়ি এলাকার বাগান থেকে পেয়ারা সংগ্রহ করে লাল কাপড় দিয়ে বেঁধে বিক্রির জন্য হাটে আনেন চাষিরা। প্রতিদিন ভোরবেলা থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া থেকে চন্দনাইশের অন্তত সাতটি জায়গায় বসে পেয়ারার হাট।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কাঞ্চন পেয়ারার সুখ্যাতি রয়েছে দেশে- বিদেশে। জুলাই মাসের শুরু থেকে চন্দনাইশ-পটিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এই পেয়ারা বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। কাঞ্চন পেয়ারা পুরােদমে বাজারে আসে আগষ্ট মাসে বলে জানান পেয়ারা সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। প্রতি মৌসুমে উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় বিপুল পরিমানে রসালাে ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই কাঞ্চন পেয়ারা উৎপাদিত হয়। চন্দনাইশ উপজেলার ১নং কাঞ্চননগর ও হাসিমপুর ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ পাহাড়ী এলাকায় সর্বাধিক পেয়ারা চাষ হওয়ায় এখানকার উৎপাদিত পেয়ারা কাঞ্চন পেয়ারা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

স্থানীয় পেয়ারা বাগানিরা জানান, কাঞ্চননগর ছাড়াও উপজেলার ধােপাছড়ি, এলাহাবাদ, জঙ্গল হাশিমপুর, ধোপাছড়ি, দোহাজারী, জামিজুরীসহ পটিয়া উপজেলার বিভিন্ন বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণ পেয়ারা উৎপাদন হয়। প্রতি মৌসুমে চন্দনাইশের এসব পাহাড়ি অঞ্চলে প্রায় ২ হাজার বাগানে পেয়ারা চাষ করা হয়। কোনাে প্রকার কীটনাশক ছাড়াই এই পেয়ারা চাষ হয় বলে এখানকার পেয়ারাকে অর্গানিক পেয়ারা হিসেবেও ধরে নেয়া যায়।

Image

জানা যায়, এখন অল্প পরিমাণ পেয়ারা বাজারে আসলেও পুরােদমে পেয়ারা বাজারে আসবে আগষ্ট মাসে। এ অঞ্চলে উৎপাদিত পেয়ারা সাইজে বড়, দেখতে সুন্দর, খেতে সুস্বাদু। এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর হওয়ায় দেশ-বিদেশে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ফলে এখানকার উৎপাদিত পেয়ারা ক্রয় করে পাইকাররা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরবরাহ করে থাকেন। মৌসুমের শুরুতে আসা পেয়ারা একটু বেশি দামে বিক্রি হয় বলে জানা যায়। প্রতি ডজন পেয়ারা প্রকারভেদে বর্তমানে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১৭০ টাকায়। প্রতি মৌসুমে এ অঞ্চলের শত শত বেকার যুবক পেয়ারার লাল শালু কাপড়ের পুটলি নিয়ে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের খানহাট, গাছবাড়িয়া কলেজ গেইট, বাদামতল বিজিসি ট্রাস্ট, রওশনহাট, কমল মুন্সিরহাট, বাগিচাহাট, দেওয়ানহাট ও দোহাজারী রেল স্টেশন সহ মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে বিক্রি করেন।

চাষিরা জানান, প্রতি মৌসুমে এ অঞ্চলে শত কোটি টাকার পেয়ারা উৎপাদন হলেও পেয়ারা বিক্রির জন্য উপজেলার কোথাও নেই নির্দিষ্ট কোন স্থান। ফলে পেয়ারা চাষীদেরকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে এই পেয়ারা বিক্রি করতে হয়।

একাধিক পেয়ারা ব্যবসায়ীর অভিযোগ। নতুন আতংক পাহাড়ী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। পাহাড়ে পেয়ারা আনতে গেলে তাদের চাঁদা দিতে হয়, নাহলে আটকে রেখে পরিবারের নিকট ফোন করিয়ে টাকা দিতে বাধ্য করে। টাকা দিতে দেরি হলে মারধর করে। পেটের দায়ে জীবিকার তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ে যেতে হয় বাধ্য হয় পেয়ারা চাষীরা।

এই বিষয়ে প্রশাসনের নজর দেয়া উচিত বলে মনে করে পাহাড়ে ক্ষেত – খামার করে জীবিকা নির্বাহ করা চাষিরা।

Author

মোহাম্মদ ইসমাইল (ইমন), স্টাফ রিপোর্টার

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ৩০ মে থেকে মিশন ৯০ নিউজে চট্টগ্রাম বিভাগীয় এলাকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker