চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় কমিউনিটি সেন্টারের আড়ালে চলছে জমজমাট ক্যাসিনো, জুয়ার আসর, সমাজকল্যাণ ও পুলিশ কর্মকর্তা জড়িতের অভিযোগ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:

চট্টগ্রাম নগরীর ঘনবসতিপূর্ণ বৃহত্তর বাকলিয়া থানা এলাকায় চলছে একাধিক ক্যাসিনো, জুয়ার আসর। দিনরাত চব্বিশ ঘন্টা একনাগারে চলে এসব জুয়ার আসর। সবচেয়ে বড় জুয়ার আসরটি বসে বাকলিয়া থানা এলাকার কালামিয়া বাজারস্থ বাহার কমিউনিটি সেন্টারের চতুর্থ তলায়।

বাহার কমিউনিটি সেন্টারের চতুর্থ তলার পুরো ফ্লোর ভাড়া নিয়ে সেখানে ডেকোরেশন ও ঝলমলে আলোক সজ্জায় সজ্জিত করে জুয়ার আসর জমিয়েছে সমাজ কল্যাণ অফিসার নাজমুল ও এক পুলিশ সাব ইন্সপেক্টর ইসমাইল হোসেন। 

অনুসন্ধানে ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দুই দুই বছর যাবৎ বাহার কমিউনিটি সেন্টারে সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা নাজমুল ও পুলিশ এস আই পরিচয়ে ইসমাইল খন্দকার এই জুয়ার আসর বসিয়ে সন্ধ্যা থেকে সকাল অবধি জুয়ার আসর চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতি রাতে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছে এ জুয়ার আসর থেকে।

জানা গেছে প্রতিদিন কমপক্ষে সাত-আট গ্রুপ এ কমিউনিটি সেন্টারে জুয়ার আসরে বসে।এখানে চেয়ার টেবিল তরে তরে সাজানো আছে। জুয়া ক্যাসিনো খেলার নানা সরঞ্জাম, জুয়াড়িদের সেবায় নিয়োজিত আছে বেশ কয়েকজন কর্মচারী। চা-নাস্তা, রাতের খাবার, লাল নীল পানীয় সহ সবই আছে এ ফ্লোরে।আসর জমে ৪০ থেকে ৫০ জনের। 

প্রতিটি খেলার বোর্ড বা আসর থেকে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পায় নাজমুল ও ইসমাইল।জুয়াড়িদের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব তাদের। কালামিয়া বাজারের একাধিক ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে বাহার কমিউনিটি সেন্টারে চলছে জুয়ার আসর। নাম প্রকাশ না করা সর্ত্বে কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন ব্যবসায়ীরাও তা স্বীকার করেন।  

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাজমুল সমাজকল্যাণে কর্মরত আছে বলে স্বীকার করেন। তবে এই জুয়ার আসরের সাথে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই বলে জানালেও তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন তিনি তাসের আড্ডায় যান কিন্তু তার কোন সম্পৃক্ততা নেই।কথার প্রসঙ্গে নাজমুল এই আসরে পুলিশ কর্মকর্তা সহ আরো অনেক সরকারি অফিসাররাও যায় এবং জুয়া খেলে।

আমি অফিস থেকে আসার পথে মাঝেমধ্যে বসি তবে এতে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। যারা এই আসর চালায় তাদের নাকি সরকারি অনুমোদন আছে। তাদের একজন ম্যানেজার আছে নাম জিয়া, তিনি সবই জানেন। এই বিষয়ে জিয়া ভাইকে বলবো আপনার সাথে যোগাযোগ করতে,এসব কথা নাজমুলের। নাজমুলের কথামতে তিনি বান্দরবানে কর্মরত আছেন। কিন্তু বান্দরবান সমাজ কল্যাণ অফিসে খবর নিয়ে জানাগেছে ওখানে নাজমুল নামের কেউ নেই। কথা হয় সাব-ইন্সপেক্টর ইসমাইলের সাথে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে নারাজ বলে ফোন কেটে দেন। পরে এই বিষয়ে জানতে জিয়া নামের ঐ ব্যাক্তি ,নাজমুলের কথায় জুয়ার আসরের ম্যানেজার জিয়ার মুঠো ফোনে কল করলে বলেন নাজমুল যুব উন্নয়নে চাকুরি করেন।

এ জুয়ার আসর বসানো নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ আছে থানা পুলিশ ও ডিবিকে মাসে মাসে মাসোয়ারা দিয়ে এ জুয়ার আসর চলছে। ম্যানেজার জিয়া সংবাদ প্রকাশ না করতে বারণ করে। এবং এই প্রতিবেদককে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে নিউজ করে কি করতে পারবেন দেখবো বলে লাইন কেটে দেন। এবং সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য হুমকি প্রদান করে। পরে বারবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করে কেটে দেন।এ ব্যাপারে ওসি বাকলিয়া আফতাব হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি এই জুয়ার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।

Author

মোহাম্মদ ইসমাইল (ইমন), স্টাফ রিপোর্টার

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ৩০ মে থেকে মিশন ৯০ নিউজে চট্টগ্রাম বিভাগীয় এলাকায় স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker