চট্টগ্রাম

পরকীয়ার জেরে হোটেলে নিয়ে ভাবিকে হত্যা

নিজের স্বামীর পরকীয়া সন্দেহে গৃহবধূ শাহিদা জাহান সুমি (৩৫) সংসার ছেড়ে এক বছর আগে। তিন সন্তান নিয়ে স্বামীর কলসি দিঘির বাসা থেকে বাবার বাড়ি হালিশহরের শাহজাহান এলাকায় চলে যান। একই এলাকার বাসিন্দা আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে দুই বছরের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ওই গৃহবধূর। এবার প্রেমিকাকে (গৃহবধূ) সন্দেহ হয় আশরাফুলের। সুমি ও আশরাফুল সম্পর্কে দেবর-ভাবি।

গতকাল সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টায় চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের কার্যালয়ে মিডিয়া সেন্টারে উপপুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) মো: আবদুল ওয়ারীশ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

সন্দেহের কারণে হালিশহরের একটি হোটেলে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে পরে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যান তিনি। নিজের নাম-ঠিকানা আইডি কার্ডে দেওয়া পরিচয় ভুয়া থাকায় প্রথম দিকে পুলিশ তাকে চিহ্নিত করতে না পারলেও তিন দিনের মধ্যেই ঢাকার আশুলিয়া দুলাভাইয়ের বাসা থেকে রোববার রাতে আশরাফুলকে গ্রেপ্তার করে হালিশহর থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তার আশরাফুল নোয়াখালীর সেনবাগের বিন্নাঘুনি দিঘির পাড়ের নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে রিপোর্ট ডেলিভারি সেকশনে চাকরি করেন।

উপপুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) মো: আবদুল ওয়ারীশ বলেন, পরকীয়া প্রেমিকা গৃহবধূ শাহিদা জাহান সুমির সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল আশরাফুল আলমের।

সে কারণে সুমিকে হত্যার পরিকল্পনা নেয় আশরাফুল। গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার উত্তরা থেকে চট্টগ্রামে আসেন। পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে কামরুল হাসানের পরিচয়পত্র দিয়ে সকাল ৮টায় আবাসিক হোটেলটির ৮০২ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন আশরাফুল। কিন্তু তখন পরিচয়পত্রের সঙ্গে ছবি মিলিয়ে দেখেনি হোটল কর্তৃপক্ষ। পরে বিকেল সাড়ে ৫টায় গৃহবধূ সুমি ওই হোটেলের ৮০২ নম্বর কক্ষে যান। তাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে রুমের ভেতর একটি ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করেন আশরাফুল। পরে রক্তমাখা পোশাক মরদেহের পাশে রেখে রুমের বাইরে তালা দিয়ে বন্ধ করে চলে যান। ওইদিন রাত ১১টায় খোঁজ করতে গিয়ে হোটেল বয়দের সন্দেহ হলে তারা হালিশহর থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহত নারীর পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় পরের দিন সকালে পুলিশ বাদী হয়ে হালিশহর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ হত্যাকারীকে ধরতে সোর্স এবং আধুনিক প্রযুক্তি, সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজের মাধ্যমে তদন্ত শুরু করে। হত্যার তিনদিন পর ঢাকার আশুলিয়ার থানার দক্ষিণ গজির চট এলাকায় দুলাভাইয়ের বাসা থেকে গত রোববার রাত ১১টার দিকে আশরাফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযানে থাকা হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমরা সিসিটিভি ফুটেজ এবং আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে আসামি আশুলিয়ায় অবস্থান করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে তার অবস্থান শনাক্ত করি। রোববার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করি। তাকে আদালতে হাজির করা হবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker