চট্টগ্রাম

বাবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যাচ্ছিলেন, ৪ ভাইকে পিষে মারল পিকআপ

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার মালুমঘাট এলাকায় সবজিবোঝাই অজ্ঞাত পিকআপের চাপায় ঘটনাস্থলে চারজনসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো তিনজন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহত তিনজনের একজন মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিস্টান হাসপাতাল, আরেকজন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নিজ এলাকা হাসিনাপাড়ার সামনে মহাসড়কের পূর্বাংশে মর্মান্তিক এই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কারণ তারা সড়কের ওপর কেউ দাঁড়িয়ে ছিলেন না। হতাহতরা সড়ক থেকে অন্তত দুই ফুট দূরে এক কাতারে দাঁড়িয়ে ছিলেন। চকরিয়া থেকে কক্সবাজারগামী সবজিবোঝাই একটি অজ্ঞাত পিকআপ তাদেরকে মুহূর্তের মধ্যে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন মারা যান। আহত হন এক বোনসহ আরো তিনজন।

হতাহতদের মধ্যে সবাই একই পরিবারের সদস্য। নিহতরা হলেন- চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট এলাকার হাসিনাপাড়ার মৃত সুরেশ চন্দ্র শীলের পাঁচ পুত্র যথাক্রমে অনুপম শর্মা (৪৫), নিরূপম শর্মা (৪৩), দীপক শর্মা (৪০) ও চম্পক শর্মা (৩৮)। আহতরা হলেন- রক্তিম শর্মা (৩০), প্লাবন শর্মা (২৮) ও বোন মুন্নী শর্মা (৩৪)।

নিহতদের নিকটাত্মীয়রা জানান, নিহতদের বাবা সুরেশ চন্দ্র শীল মারা যান ১০ দিন আগে। সেই অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান করার জন্য সব প্রস্তুতিও নেওয়া হয়। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাদের প্রয়াত বাবার আত্মার শান্তি কামনায় আজ ভোরে বাড়ির কাছের নির্জন এলাকায় ধর্মীয় কার্য সম্পাদন করতে যান। তখন সবাই ছিলেন এক পোশাকে (সাদা কাপড়ে)। সেখানে তারা মহাসড়কের পূর্বাংশে সড়ক থেকে অন্তত দুই ফুট দূরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে কারো জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ঠিক সেই মুহূর্তে চকরিয়া থেকে কক্সবাজারমুখী একটি সবজিবোঝাই পিকআপ তাদেরকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর বলেন, মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় একসঙ্গে এক পরিবারের চার জন নিহত হওয়ার ঘটনায় পুরো ইউনিয়নে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে নিহতদের সৎকারের জন্য নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

মহাসড়কের মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো: শাফায়েত হোসেন বলেন, ‘যখন দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে তখন ছিল ভোরবেলা এবং দুর্ঘটনার স্থানটি অনেকটাই নির্জন এলাকা। তাই পিকআপটিকে এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে সেটি শনাক্ত এবং ঘাতক চালককে আটক করার চেষ্টা চলছে। ’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, বাবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার দিনে একসঙ্গে এত সদস্যের প্রাণহানি হৃদয়বিদারক। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া হবে।

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker