বন গবেষণাগারে বার বার অভিযান সত্ত্বেও কেন অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে?
চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন বন গবেষণাগার সংলগ্ন এলাকায় পুলিশের বারবার অভিযান সত্ত্বেও অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ হচ্ছে না। গত পাঁচ দিনের ব্যবধানে আটজন নারী-পুরুষকে আটক করা হয়েছে। এর আগে ওই এলাকা থেকে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাবের কারণে অপরাধীরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার অধীন বন গবেষণাগার সংলগ্ন এলাকায় পুলিশের একের পর এক অভিযান চালানো সত্ত্বেও বারবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে অসামাজিক কার্যকলাপ। সম্প্রতি মাত্র ৫ দিনের ব্যবধানে ৮ জন নারী-পুরুষকে হাতেনাতে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে ওই একই এলাকা থেকে আরও ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যা স্থানীয় এবং জাতীয় গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়।
অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মূল কেন্দ্র ছিল সামার হিল এলাকার বন গবেষণাগার ও মৎস্য অফিসের পেছনে অবস্থিত একটি সেমিপাকা ভবন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ‘আরমান গং’ নামের একটি চক্রের দখলে থাকা এই ভবনটি তারা ভাড়া দেয় শিবু পালিত জুয়েল ওরফে জুয়েল নামের এক ব্যক্তিকে, যিনি ইয়াবা, মদ এবং নারী ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। জুয়েলকে সহযোগিতা করতেন থানার সোর্স হিসেবে পরিচিত সাবেক হোটেল কর্মচারী জসিম।
২০২৪ সালের আগস্ট মাসে স্থানীয়রা একবার ভবনটি গুঁড়িয়ে দিলেও আরমান ও জুয়েল পুনরায় ভবনটি সচল করে ফেলে।
সর্বশেষ গত ২৮ জুলাই পুলিশের ডিসি (উত্তর) ও পাঁচলাইশ থানার ওসির নেতৃত্বে বড় পরিসরের অভিযান পরিচালিত হয়। এতে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইমামসহ আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর ঠিক ৩ দিন পর, ১ আগস্ট সকালে, ওই ভবন থেকে আরও চারজন নারী ও চারজন পুরুষকে আটক করে পুলিশ।
পাঁচলাইশ থানার ওসি মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, “এই জায়গাটি বহু বছর ধরে অবৈধ দখলে রয়েছে। অভিযান চালিয়ে তালা লাগানো হলেও অল্প সময়ের মধ্যেই তা আবার চালু করে ফেলা হয়। এবার কঠোর ও স্থায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
বন গবেষণাগার মসজিদের উপদেষ্টা ও স্থানীয় সিটিজেনস ফোরামের সভাপতি তারেক রশীদ বলেন, “প্রশ্ন হলো, প্রতিবার তালা দেওয়া ভবন কিভাবে এত সহজে খুলে যায়? এটার পেছনে কারা আছে, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।”