জাতীয় জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
বৈষম্যহীন বাংলাদেশ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের অঙ্গীকার
জাতীয় জুলাই শহীদ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আজ (১৬ জুলাই) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিনিয়র সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দীন কাদেরী শওকতের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই মাহফিলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে এই দিবস, যা ২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণআন্দোলনের শহীদদের স্মরণে উৎসর্গীকৃত।
কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন
জাতীয় জুলাই শহীদ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত এই কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য শাহনেয়াজ রিটন, বৈশাখী টিভির ব্যুরোচীফ গোলাম মওলা মুরাদ, ইসলামী টেলিভিশনের সাবেক ব্যুরোচীফ শহীদুল ইসলাম, নিউজগার্ডেনের সম্পাদক কামরুল হুদা, দৈনিক দিনকালের ব্যুরোচীফ হাসান মুকুল, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য মোহাম্মদ আলী, দৈনিক কর্ণফুলীর সাবেক সিনিয়র সদস্য মোহাম্মদ আলী পাশা, কর্ণফুলী সাংবাদিক মোহাম্মদ তোহা, বিজনেস বাংলাদেশের ব্যুরোচীফ জাহাঙ্গীর আলম, এটিএন বাংলার ফরিদ উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, ফারুক আবদুল্লাহ, বজল আহমদ, দৈনিক আজকের বাংলা চট্টগ্রাম ব্যুরোচীফ ইসমাইল ইমন, মো: তানভীর, কামাল পারভেজ, সাইফি আনোয়ার, তুষার মুজিব, তৌহিদুল ইসলাম সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মাহফিলে কোরআন খতমের পাশাপাশি শহীদদের জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়, যেখানে আল্লাহতায়ালার কাছে তাদের বেহেশত নসিবের প্রার্থনা জানানো হয়।
‘জুলাই শহীদ দিবস’ ও এর তাৎপর্য
১৬ জুলাই ২০২৫ প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে “জুলাই শহীদ দিবস”। ২০২৪ সালের সেই রক্তাক্ত জুলাই মাসের স্মৃতিকে সামনে রেখে এই দিবসটি পালিত হচ্ছে, যখন অপশাসনের বিরুদ্ধে দেশের সর্বস্তরের মানুষ সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। শাসনযন্ত্রের দীর্ঘদিনের নিপীড়ন, প্রতারণা ও দমন সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেলে মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। সেই আন্দোলন শুধু একটি শাসকের পতন নয়, বরং একটি জনগোষ্ঠীর আত্মমর্যাদা পুনরুদ্ধারের ঐতিহাসিক প্রয়াস ছিল, যা আত্মত্যাগে রঞ্জিত হয়।
আন্দোলনের শহীদরা ছিলেন নিরস্ত্র, কিন্তু ন্যায়ের পক্ষে অবিচল। তাদের সম্মানেই এই দিবসটি পালিত হচ্ছে। এটি কেবল একটি সরকারি গেজেটের তারিখ নয়, বরং জনগণের অভিজ্ঞতাকে ইতিহাসে স্থান দেওয়ার একটি সময়োপযোগী ও সাহসিক পদক্ষেপ।
শহীদ ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা ও অঙ্গীকার
এই দিনে “জুলাই শহীদ” হিসেবে গেজেটভুক্ত হওয়া সকল শহীদকে স্মরণ করা হয়, পাশাপাশি যাদের নাম আলোচনার বাইরে রয়ে গেছে, কিন্তু ইতিহাস যাদের কাছে ঋণী, তাদেরও স্মরণ করা হয়। আহতদের রাষ্ট্র “জুলাই যোদ্ধা” হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, যা কেবল মর্যাদার নয়, দায়িত্বেরও বটে।
শহীদদের জন্য চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিলের মুনাজাত পরিচালনা করেন কদম মোবারক এতিমখানার হাফেজ মোহাম্মদ সেলিম। মুনাজাতে শহীদ আবু সাঈদ, শহীদ ওয়াসিম, শহীদ মুগ্ধ, শহীদ শান্ত সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিহত শহীদ, আহত সহ শহীদ ও আহত সাংবাদিকদের জন্যও দোয়া করা হয়।
এ ছাড়াও দেশের সব মসজিদের খতিব, ইমাম ও মসজিদ কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট সবাই বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করেন। আজকের এই দিনে সবার অঙ্গীকার, আগামীর বাংলাদেশ হবে বৈষম্যহীন এবং দেশে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার হবে।