গত ৫/৫/২৪ইং রোজ বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে বিজয়ের আনন্দ মিছিলে নিহত আয়াশ রহমান এজাজ হত্যার হোতা জেলা ছাত্রলীগের (বহিষ্কৃত) সহ-সভাপতি হাসান আল ফারাবী জয়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল ৮/৫/২৪ইং রোজ শনিবার ঢাকা ও নেত্রকোনা পুলিশের যৌথ সহায়তায় তাকে গ্রেফতার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার কলেজপাড়া এলাকার কলেজ শিক্ষক দম্পতি ইয়াকুব আলী ও রোকেয়া বেগমের একমাত্র ছেলে।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেন নিজ কার্যালয়ে আসামীকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শুক্রবার ভোরে নেত্রকোণার আটপাড়ার কুতুবপুর গ্রাম থেকে জয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া স্বীকারোক্তি মতে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের ভাটপাড়া গ্রামের একটি ঝোঁপ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, সাবেক ভিপি জালাল উদ্দিন খোকা ও বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি হাসান আল ফারাবী জয় খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। নিহত আয়াশ রহমান এজাজও তাদের সঙ্গে চলাফেরা করতেন, তারা একই পাড়ার বাসিন্দা। কলেজপাড়া এলাকায় এককভাবে প্রভাব বিস্তার করত খোকা ও জয়। তবে নিহত এজাজ ও তার সঙ্গের কয়েকজন তাদের কিছু কিছু সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতো। আর এ কারণেই এজাজ ও তার কয়েকজন বন্ধুর প্রতি ক্ষিপ্ত ছিল খোকা ও জয়। এ বিরোধ আস্তে আস্তে চরম আকার ধারণ করে। জালাল উদ্দিন খোকা, হাসান আল ফারাবি জয় ও আরও বেশ কয়েকজন মিলে এলাকায় একক আধিপত্য বজায় রাখার জন্য এজাজ ও তার সঙ্গে চলাফেরা করা কয়েকজনকে চরম শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২ই জুন শহরের আরেকজনের কাছ থেকে খোকা অস্ত্রটি সংগ্রহ করে জয়কে দিলে সে এজাজকে মারার সুযোগ খুঁজতে থাকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নির্বাচনের দিন ৫ই জুন সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় নির্বাচন শেষে কলেজ পাড়া এলাকায় বিজয় উল্লাস করার জন্য ২০/২৫ জন লোক জড়ো হয় এবং সেখানে খোকা, জয় ও এজাজও ছিল। খোকার সঙ্গে কোনো একটা বিষয় নিয়ে এজাজের তর্ক বির্তক চলা অবস্থায়ই জয় তার কোমর থেকে পিস্তল বের করে এজাজকে প্রকাশ্যে গুলি করে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। যা ভিডিওতে স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, আসামি হাসান আল ফারাবিকে নিবিরভাবে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযুক্ত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। বিশেষ করে অস্ত্রের মালিককে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
উক্ত সাংবাদিক সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশাসন মো. ইকবাল হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) জয়নাল আবেদীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) বিল্লাল হোসেন, সদর থানার ওসি আসলাম হোসাইন ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. আফজাল হোসেন সহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে খুনী ফারাবীকে গ্রেফতারের খবর পেয়ে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে এসে ভিড় করেন নিহত এজাজের আত্মীয় স্বজনরা। এ সময় তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে খোকাসহ অন্য অভিযুক্তদেরকেও গ্রেফতারের দাবি জানান।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.