ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভুয়া চিকিৎসক গ্রেফতার, চারটি বেসরকারি হাসপাতালকে লক্ষাধিক টাকা জরিমানা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের চারটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিভিন্ন অনিয়ম ও অনুমোদনের কাগজপত্র না থাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। একই অভিযানে এক ভুয়া চিকিৎসককে হাতেনাতে আটক করে তিন দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং একটি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের চারটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিভিন্ন অনিয়ম ও অনুমোদনের কাগজপত্র না থাকায় **১ লাখ ১৫ হাজার টাকা জরিমানা** করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় একজন ভুয়া চিকিৎসককে হাতেনাতে আটক করে তিন দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়েছে।

রবিবার (২৯ জুন) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট **সিফাত মোহাম্মদ ইসতিয়াক-এর** নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে সহযোগিতা করেন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

অভিযানে মৌলভীপাড়ার **’পিএসপি ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড লেজার থেরাপি সেন্টার’**-এ গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির মালিক **স্বপন চন্দ্র সাহা** ডাক্তার পরিচয়ে রোগী দেখছেন। অথচ তিনি একজন ফিজিওথেরাপিস্ট। ঘটনাস্থলেই তাকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে ‘ডাক্তার’ সেজে প্রতারণার অভিযোগে তাকে **৩০ হাজার টাকা জরিমানা** এবং **তিন দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড** দেওয়া হয়। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি তাৎক্ষণিকভাবে সিলগালা করা হয়।

অপরদিকে, অনুমোদনের কাগজপত্র না থাকা এবং নোংরা পরিবেশে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার অভিযোগে শহরের হাসপাতাল রোডে অবস্থিত **‘পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার’**-কে **৫০ হাজার টাকা জরিমানা** করা হয়। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটিকে আগামী দুই মাসের মধ্যে আন্ডারগ্রাউন্ড (ভূগর্ভস্থ) স্থান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া জেল রোডের **‘আল খলিল ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতাল’**-কে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকায় **১৫ হাজার** এবং **‘গ্লোবাল অর্থোপেডিক হাসপাতাল’**-কে অনুমোদনের কাগজপত্র না থাকায় **২০ হাজার টাকা জরিমানা** করা হয়েছে।

অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন—উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা **ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান**, মেডিক্যাল অফিসার **ডা. মো. রায়হান তালুকদার** ও **ডা. মো. ঈসমাইল ভূঁইয়া রাহাত**, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ও ভারপ্রাপ্ত জেলা সুপারভাইজার **মো. শফিউর রহমান**, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক **মো. মনিরুল ইসলাম**। এছাড়াও গণঅধিকার পরিষদের ইঞ্জিনিয়ার **ফখরুদ্দিন**, **মো. শিবির আহমেদ ভূঁইয়া**, **শাহ আলম**সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা **সিফাত মোহাম্মদ ইসতিয়াক** বলেন, “ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনেক ভুয়া ডাক্তার ও অনুমোদনহীন ক্লিনিক আছে। জনগণের স্বাস্থ্যসেবা যেন প্রতারণার শিকার না হয়, সে লক্ষ্যেই আজকের অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।”

জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিয়মিতভাবে এমন অভিযান চালিয়ে অনুমোদনহীন, অব্যবস্থাপনার ও প্রতারক চিকিৎসক-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে।

Author

মো: মেহেদী হাসান, ব্রাহ্মনবাড়িয়া প্রতিনিধি

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ৩০ জুন থেকে মিশন ৯০ নিউজে ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker