ব্রাহ্মণবাড়িয়া

পাহাড়ি ঢলে আখাউড়ার ২০ গ্রাম প্লাবিত, আখাউড়া-আগরতলা সড়ক তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা

ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার প্রায় ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আখাউড়া স্থলবন্দর ও আশপাশের এলাকায়ও পানি প্রবেশ করেছে, যা আখাউড়া-আগরতলা সড়ক তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে।

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার অন্তত ২০টি গ্রাম কমবেশি প্লাবিত হয়েছে। পানি উঠে গেছে আখাউড়া স্থলবন্দর ও এর আশপাশের এলাকাগুলোতেও। এতে ঘরবাড়ি, পুকুর, সবজি ক্ষেত এবং রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আজ (রবিবার, ১ জুন) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, স্থলবন্দরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা কলন্দি খাল, কালিকাপুর হয়ে আব্দুল্লাহপুর দিয়ে জাজি গাং, বাউতলা দিয়ে মরা গাং এবং মোগড়া ইউনিয়নের হাওড়া নদী দিয়ে অস্বাভাবিক হারে পানি প্রবেশ করছে। এর ফলে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিকাপুর, বীরচন্দ্রপুর, আব্দুল্লাহপুর, বঙ্গেরচর, রহিমপুর, সাহেবনগর, খলাপাড়া, উমেদপুর, সেনারবাদী, কুসুমবাড়ি, আওরারচর, ছয়ঘরিয়া, বাউতলা, নোয়াপাড়া, নিলাখাদ, টানুয়াপাড়া এবং মনিয়ন্দ ইউনিয়নের টনকি, ইটনা ও কর্ণেলবাজারসহ অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, “শনিবার রাত থেকে হু হু করে পানি ঢুকতে শুরু করে। এতে তাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। অনেক জায়গায় মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।”

আখাউড়া স্থলবন্দরের মৎস্য রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক মিয়া জানান, “গতরাত থেকে বন্দরের আশপাশে পানি বাড়ছে। এখনো রপ্তানি কার্যক্রমে বড় কোনো বিঘ্ন না ঘটলেও পানি যেভাবে বাড়ছে, তাতে আখাউড়া-আগরতলা সড়ক তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে করে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।”

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিএম রাশেদুল ইসলাম বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজনে সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।”

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনজুর রহমান জানান, “হাওড়া নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও এখনো বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। নদীর পানি বিপদসীমা থেকে প্রায় ২ মিটার নিচে রয়েছে এবং কোথাও বাঁধ ভাঙার খবর পাওয়া যায়নি।”

উল্লেখ্য, গত বছর আগস্টেও পাহাড়ি ঢলে হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে উপজেলার প্রায় ৩৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। তখন প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়েছিল এবং ব্যাপক ফসল ও মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছিল।

Author

মো: মেহেদী হাসান, ব্রাহ্মনবাড়িয়া প্রতিনিধি

পেশায় একজন সাংবাদিক। তিনি ৩০ জুন থেকে মিশন ৯০ নিউজে ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি হিসেবে, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker