চট্টগ্রাম

যেভাবে পুলিশের জালে ধরা পড়েছে সন্ত্রাসী সাজ্জাদ

চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ, যিনি চট্টগ্রামে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন, অবশেষে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। সন্ত্রাসী সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীরা তার সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বড় সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন।শুক্রবার, ১১ আগস্ট, চট্টগ্রামের ত্রাস ছোট সাজ্জাদ ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের লেভেল সিক্স থেকে পুলিশের হাতে আটক হন। সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ জানিয়েছেন, “এই সন্ত্রাসী চট্টগ্রাম শহরের বাইরে এবং ঢাকা শহরে বিভিন্ন স্থানান্তরিত হয়ে তার কার্যক্রম চালাতো।”

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ জানান, “ওর স্ত্রী আছে ২৫-২৬ জন। তো মোটামুটি তাদের সবারই সহযোগিতা রয়েছে আশ্রয়-প্রশ্রয় বিষয়ে। তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে প্রয়োজনে।”

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাজ্জাদ চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি, অস্ত্র সংক্রান্ত এবং ছিনতাইয়ের মোট ১৫টি মামলায় অভিযুক্ত। এই সন্ত্রাসী তার ভয়াবহ কার্যকলাপের জন্য চট্টগ্রাম শহরে এক সময় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, “সাজ্জাদের স্ত্রীরা তার সন্ত্রাসী কার্যক্রমে সহযোগিতা করেছে। তার স্ত্রীরা ২৫-২৬ জনের কাছ থেকে আশ্রয় এবং প্রশ্রয় পেয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে সাহায্য করেছিল। তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে প্রয়োজনে।”

তিনি আরও জানান, “এ ধরনের অপরাধীকে গ্রেফতার করা চ্যালেঞ্জিং ছিল, কারণ সে প্রায়ই স্থান পরিবর্তন করত। তবে আমাদের একটি বিশেষ টিম ঢাকায় ছিল এবং একদিন তাদের হাতে নিশ্চিত তথ্য পৌঁছানোর পর আমরা তাকে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে আটক করি।”

গ্রেফতারের পর সাজ্জাদের এক স্ত্রী তার জামাইকে মুক্ত করার জন্য একটি প্রকাশ্য হুমকি দেন। তিনি বলেন, “আপনারা যারা ভাবছেন, আমার জামাই আটক হয়েছে এবং আর কখনো বের হবে না, তাদের জন্য এক বালতি সমবেদনা। আমরা বড় পরিমাণ অর্থ খরচ করে তাকে ফিরে আনার চেষ্টা করবো। আমার জামাই বীরের বেশে ফিরে আসবে, আর যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। 

 সাজ্জাদকে গ্রেফতারের পর জানা গেছে, সে অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ এবং অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। তিনি চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে হাটহাজারী, ফটেকচুরি, রাউজান, টুসা এক্সটেস্ট, রাঙ্গুনিয়া এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকায় তার কার্যকলাপ চালাতেন। তার কাছে ছিল অত্যাধুনিক অস্ত্র, যেমন AK-47 রাইফেল, AK-55, AK-57, এবং টরাস ৯ পিস্তল।

গত বছর ৫ ডিসেম্বর, চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড় থেকে সাজ্জাদকে গ্রেফতার করতে গেলে তার গুলি চালানোর ফলে পুলিশের চার সদস্য আহত হন। তবে, তার গুলির শিকার হয়ে পুলিশ তার পিছু নেয়। সিএমপি কমিশনার বলেন, “আমাদের বিশেষ টিম তাকে অনুসরণ করে ঢাকায় পৌঁছেছিল এবং গত শনিবার তার অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়।”

সাজ্জাদ গ্রেফতারের সময় তার স্ত্রীর সাথে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে ছিলেন। সিএমপি কমিশনার জানিয়েছেন, “ইন্টেলিজেন্স তথ্য অনুযায়ী, সাজ্জাদ এই সময় ঢাকায় ছিল, এবং সিএমপির টিম আগে থেকেই সেখানে অবস্থান করছিল।” তার অবস্থা ছিল খুবই দুর্বল এবং তিনি যেভাবে স্থান পরিবর্তন করতেন, তা চট্টগ্রামে তাকে ধরতে আরও কঠিন করে তুলেছিল।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এই গ্রেফতারের পর সন্ত্রাসী সাজ্জাদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, “এ ধরনের অপরাধী এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে এবং আমরা তাদের প্রতিরোধে কোনও ছাড় দেবো না।”

Author

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সম্পর্কিত সংবাদ

Back to top button
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker