লিটন আহমেদ, (টাঙ্গাইল) কালিহাতী প্রতিনিধি:
ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঘাটাইল উপজেলার লক্ষিন্দর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। আক্ষেপ নিয়ে এই কথাগুলো বলছিলেন টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার লক্ষিন্দর ইউনিয়নের বাসাবাইদ এলাকার বাসিন্দা মাহমুদ আলী। সরেজমিন লক্ষিন্দর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে গেলে স্থানীয়রা জানান, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও গর্ভবতী ভাতাসহ এমন কোনো ভাতা নেই যেখান থেকে নুরুল ইসলাম ঘুষ নেন না। উপকারভোগীরা কার্ড করার জন্য কখনও ভাতার পুরো টাকা, কখনও অগ্রিম টাকা, কখনও বা ভাতার টাকার একটি অংশ দিতে বাধ্য হন তাকে। টাকা না দিলে কার্ড করে দেন না বলেও অভিযোগ করেছেন অনেক ভু্ক্তভূগি। টাকা দেয়ার বিষয়টি কাউকে জানালে তার হেনস্তার শিকার হতে হয় সাধারণ জনগণের।
আব্দুল আলী নামে একজন অভিযোগ করে বলেন, ‘কার্ড করতে নাকি অনেক টাকা লাগে। উপজেলার বিভিন্ন কর্মকর্তাকে নাকি ঘুষ দিতে হয়। উপজেলার কর্মকর্তাদের টাকা না দিলে কার্ড করা যায় না। এসব কথা বলে মেম্বার আমার কাছ থেকে কার্ড করার আগে চার হাজার টাকা নেন। আমি ঋণ করে তাকে টাকা দেই। পরে আমাকে অনেক দিন ঘুরিয়ে কার্ড করে দিয়েছে।’ স্থানীয় আব্দুস সালাম নামে এক ব্যাক্তি বলেন, ‘আমি মেম্বারের কাছে গিয়েছিলাম বয়স্ক ভাতার কার্ড করার জন্য। তিনি বলেন- টাকা ছাড়া এসব কার্ড করা যায় না। পরে ঋণ করে মেম্বারকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছি। এখন কার্ডও দেয় না, টাকাও ফেরত দেয় না।’
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘টাকা দিতে দেরি হলে মেম্বার ওই টাকা নেয়ার জন্য আমার সঙ্গে অনেক খারাপ আচরণ করেছেন। বলেছেন- আর জীবনেও আমার ও আমার পরিবারের কাউকে কার্ড করে দিবেন না।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৪ নং ওয়ার্ডের একাধিক বাসিন্দা জানান, তারা কার্ড করার আগেই ইউপি সদস্য নুরুল ইসলামকে পাঁচ হাজার টাকা করে দিয়েছেন। যারাই টাকা দেন তাদেরই কার্ড হয়েছে। অনেকের কার্ড করে দেবেন বলে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়া যদি কেউ মুখ খুলে তাহলে মেম্বার নুরুল ইসলাম তাদের কার্ড বাতিল করে দেয়ার হুমকি দেন। দেয়া হয় মারধরের হুমকিও। তাই এ বিষয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম বলেন, ‘টাকা নেয়ার বিষয়টি সত্য নয়। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি কোনো ভাতার কার্ড করার জন্য কারও কাছে টাকা-পয়সা চাইনি।’
ইউপি চেয়ারম্যান একাব্বর আলী বলেন, ‘আমাদের কাছে কেউ ওই মেম্বারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে নাই। বিষয়টি আমার জানা নাই । তবে অভিযোগ পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’
ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, ‘এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.